বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাতক্ষীরা জেলা ইউনিটের কমান্ডার মোশারফ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর রাতেই পালাতে শুরু করে পাকবাহিনী। পরদিন সকালে রাজাকার আলবদর বাহিনী তাদের অস্ত্র ও মালামাল ফেলে প্রাণ বাঁচাতে স্ব স্ব ক্যাম্প থেকে পালাতে থাকে।
তিনি বলেন, ১৬টি মুখোমুখি ও ‘খ’ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৭ ডিসেম্বর মুক্ত হয় সাতক্ষীরা।
৭ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযুদ্ধের সংবাদ বাহক সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুরের ছাকুর কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে মাটিয়াডাঙ্গা ক্যাম্প থেকে ১৭ জনের গ্রুপ পুরাতন সাতক্ষীরা হয়ে সাতক্ষীরা কোর্ট চত্বরে পৌঁছায়। এ গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন আব্দুল মহিত খান চৌধুরি দুলু। সেখানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন আবু নাছিম ময়না। মাটিয়াডাঙ্গা ক্যাম্পের মোস্তাফিজ, জজ, মঈদ খানসহ মুজিব বাহিনীর দলটি পরে চলে যান খুলনার কপিলমুনি যুদ্ধে। শহরের পশ্চিম দিক থেকে ৮ নম্বর সেক্টরের ক্যাপ্টেন শফিউল্লাহ ও ক্যাপ্টেন মাহবুবের নেতৃত্বে সোনা, আব্দুল্লাহ, রফিক, মান্নান শহরে প্রবেশ করে যশোরের মনিরামপুরের উদ্দেশে রওনা হন।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাতক্ষীরা জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার এনামুল হক বিশ্বাস বাংলানিউজকে জানান, সাব সেক্টর কমান্ডার শাহাজান মাস্টারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা পিটিআইতে উপস্থিত হন। প্লাটুন কমান্ডার নাজমুলের নেতৃত্বে আখড়াখোলার রায়পুর থেকে একটি গ্রুপ সকাল ১০টায় সাতক্ষীরায় পৌঁছায়। মুজিব বানিহীর উপ-অঞ্চল প্রধান কাজী রিয়াজের নেতৃত্বে আরেকটি দল সরাসরি বিনেরপোতায় যায়। এদিকে এফএফ বাহিনীর প্রধান স ম আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে ৬৫ জন মুক্তিযোদ্ধার দল কপিলমুনি যুদ্ধে যোগ দেন। গেরিলা কমান্ডের পদ্মা গ্রুপের প্রধান সুভাষ সরকারের নেতৃত্বে আরও একটি দল মাগুরা যুদ্ধ শেষ করে কপিলমুনি পৌঁছায়। লে. (অব.) রহমতুল্লা দাদু বীর প্রতীকের নেতৃত্বে পাইকগাছা হাতিয়াডাঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করে যুদ্ধ করেন কোকিল, আলফাজ, শফি, বজলু, মুজিবর ও গফ্ফার।
দিনটি স্মরণে র্যালি, শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভা এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করেছে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৭
আরআর