ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বরিশালে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণের কাজ শুরুর দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৭
বরিশালে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণের কাজ শুরুর দাবি জেলা কমান্ড আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন

বরিশাল: বরিশালের পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কম্পাউন্ডে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর টর্চারসেল ও চারটি বাঙ্কার সংরক্ষণের কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছে বরিশাল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বরিশাল জেলা কমান্ড।

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় শহরের বগুরারোডস্থ বরিশাল বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনে জেলা কমান্ড আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বরিশাল জেলা কমান্ড মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার (সাংগঠনিক) এনায়েত হোসেন চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত পানি উন্নয়ন বোর্ড কম্পাউন্ডে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর টর্চারসেল ও চারটি বাঙ্কার সংরক্ষণের জন্য স্থানীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়।

১৯৯২ সালে করা প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৬ সালে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়।  

বর্তমান সরকার বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের কম্পাউন্ডে (ওয়াপদা কলোনি) থাকা দু’টি টর্চারসেল ও চারটি বাঙ্কার সংরক্ষণ ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, রাস্তা, সেড র্নিমাণ ও আলোকসজ্জার জন্য সাড়ে ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।  

তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের এ বরাদ্দ বরিশাল সিটি করপোরেশন টেন্ডার আহ্বান করলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ পায়। কিন্তু টর্চারসেল ও বাঙ্কার স্মৃতি বাস্তবায়ন প্রকল্পের কাজ করতে গেলে টালবাহানা শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। তাদের বিভিন্ন অজুহাত কাজ শুরু করতে না পারায় ২০১৯ সালে ভৌত অবকাঠামো এবং সৌন্দর্যবর্ধন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কাজটি শেষ হওয়া শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

চিঠি চালাচালির পরও প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য কাজ শুরু করলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড এক মাত্র বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা এখন বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও চাচ্ছে বলেও জানান ডেপুটি কমান্ডার এনায়েত হোসেন চৌধুরী।

এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী লুৎফর রহমান জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ২০১৭ সালের ২০ জুন কাজ শুরু হওয়ার কথা। পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন অজুহাতে ৫ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও কাজটি শুরু করা যাচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জাহানারা এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী মোস্তাক আহম্মেদ আহম্মেদ জানান, টেন্ডার পাওয়ার পর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কম্পাউন্ডে (ওয়াপদা কলোনি) কাজ করতে গেলে তারা বাধা দেয়। পরবর্তীতে কাজটি আর শুরু করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক বীর বীক্রম জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একমাত্র পানি উন্নয়ন বোর্ড গড়িমসি করছে। তারা আমাদের কাছে টাকাও দাবি করেছেন। এ বিষয়ে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পর বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। এরপরও যদি কাজ না হয় তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হবে।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বাংলানিউজকে বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাঙ্কার ও টর্চারসেলসহ মহান মুক্তিযুদ্ধ বিজরিত স্মৃতিগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ড সংরক্ষণ করে আসছে। এটি সংস্কারের জন্য বরিশাল সিটি করপোরেশন যে উদ্যোগ নিয়েছিলো তা আমাদের জানা ছিলো না। বিষয়টি জানার পরে মন্ত্রণালয়ে জানানো হলেও সেখান থেকে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো পাওয়া যায়নি।

আর আর্থিক লেনদের বিষয়ে তিনি বলেন, এরকম কোনো বিষয় নেই, তবে তাদের এ কাজটি আমরা (ডিপার্টমেন্টাল ওয়ার্ক) করার দাবি জানিয়েছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বরিশাল জেলা কমান্ডার শেখ কুতুব উদ্দিন, মহানগর কমান্ডার মোখলেচুর রহমান, বরিশাল মহানগরের ডেপুটি কমান্ডার শাহজাহান হাওলাদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ এমজি কবীর ভুলু প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৭
এমএস/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।