১৯৭১সালের ২৬ এপ্রিল সকালে পাকহানাদার বাহিনীর অতর্কিত বিমান হামলায় বিধ্বস্ত হয় পটুয়াখালী। চলে গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ।
এ হামলা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে নারী-পুরুষ ওই সময় শহর সংলগ্ন লোহালিয়া ও লাউকাঠি নদীতে ঝাঁপ দেন। পটুয়াখালীর পুরনো বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় ঘর-বাড়ি।
এরআগে ২৬ মার্চ পটুয়াখালী মহিলা কলেজে কন্ট্রোল রুম খোলেন মুক্তিযোদ্ধারা। পাশের জুবিলী স্কুলে শুরু হয় মুক্তি সেনাদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ।
তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবদুল আউয়ালের সহায়তায় পুলিশ লাইন অস্ত্রাগার থেকে রাইফেল এনে তা তুলে দেওয়া হয় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে।
জেলার মাদারবুনিয়া, কালিশুরী, পাতাবুনিয়া, মৌকরন ও দুমকী এলাকায় পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে মুক্তিযোদ্ধারা।
মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হয়ে চোরাগুপ্তা হামলা চালাতে থাকলে ১৮ নভেম্বর গলাচিপার পানপট্টিতে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধে নিহত হয় ৭ পাক সেনা। সেখান থেকে পাকসেনাদের পলায়ন মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বাড়িয়ে দেয়। প্রতিরোধ গড়ে তুললে কোনঠাসা পাকহানাদর বাহিনী ৭ ডিসেম্বর রাতেই একটি লঞ্চে করে পটুয়াখালী থেকে পালিয়ে যায়।
৮ ডিসেম্বর সকাল থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা জেলা শহরে মিছিল নিয়ে আসতে শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পরে শিশুপার্কে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
পটুয়াখালী জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিট কমান্ডার এমএ হালিম মিয়া জানান, পটুয়াখালীতে যুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনীর হাতে শহীদদের গণকবরসহ স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলোর অনেকটাই আজও রয়েছে অরক্ষিত। যা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের।
দিবসটি পালন উপলক্ষে আলোচনা সভা, র্যালি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বিভিন্ন সংগঠন।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৭
এমএস/বিএস