৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনা হানাদার মুক্ত দিবসের স্মৃতিচারণ করে বাংলানিউজে এমনই ইতিহাস তোলে ধরেছেন মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার সাংবাদিক হায়দার জাহান চৌধুরী।
তিনি বলেন, ৮ ডিসেম্বর, দিবাগত রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে শহরের বিএডিসি ফার্মে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানিদের সঙ্গে সম্মুখসমরে শুরু করে তুমুলযুদ্ধ।
মুক্তিযোদ্ধাদের অপ্রতিরোধ্য আক্রমনের মুখে পাকসেনারা ৯ ডিসেম্বর, সকাল ১০টার দিকে নেত্রকোনা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
মুক্ত দিবসের সেই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশের মিত্রবাহিনী ভারতীয় সৈন্যরাও ওই যুদ্ধে অংশ নিয়ে ছিলেন।
সেদিনের যুদ্ধে পাকসেনারা অবস্থান নিয়েছিল শহরের মোক্তারপাড়া ব্রিজ ও নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়কে। আর মুক্তিযোদ্ধারা বিএডিসি ফার্মের (পূর্বদিক) ভিতরে। ৯ ডিসেম্বর, সকাল ১০টা অথবা সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলেছিল বিরতিহীন এ যুদ্ধ। পরে নিশ্চিত পরাজয় জেনে দিগ্বিদিক খুঁজে না পেয়ে জীবন বাঁচাতে অস্ত্রসস্ত্রসহ নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়ক ধরে পালিয়ে যায় পাকবাহিনী।
আর সেসময় ঘাতকের ছোড়া বুলেটে শহীদ হন- মুক্তিযোদ্ধা আবু সিদ্দিক আহম্মেদ (সাত্তার), আব্দুল জব্বার (আবু খাঁ) ও আব্দুর রশিদ। সবশেষে এই তিন শহীদের রক্তের বিনিময়ে নেত্রকোনা হয় হানাদার মুক্ত।
মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার নুরুল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, পাকসেনারা পিছু হটে পালানোর পর চারপাশ থেকে দলে দলে ছুটে এসে একত্রিত হয় মুক্তিযোদ্ধারা। ‘জয় বাংলা’ জয়ধ্বনিতে মুক্ত আকাশে উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার জাতীয় পতাকা।
সেদিনের সেই যুদ্ধ ও শহীদের স্মৃতি অম্লান করে রাখতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মূল ফটকে ‘প্রজন্ম শপথ’ নামে একটি স্মারক ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়।
এই ভাস্কর্য নেত্রকোনার হানাদার মুক্ত দিবস তথা বাঙালির গৌরবগাঁথা স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে যুগযুগ ধরে ইতিহাস তোলে ধরবে বলেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৭
বিএস