এ সংবাদে হাজার হাজার মুক্তকামী মানুষ জয় বাংলা স্লোগানে রাস্তায় নেমে আসে। বিজয় পতাকা উড়ে বাড়িতে বাড়িতে।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে জেলার সবক’টি থানা মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে চলে আসে। এ কারণে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা জেলার এআর হাওলাদার জুট মিলের ভেতর এবং সরকারি নাজিম উদ্দিন কলেজে অবস্থান নেয়। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের চারদিকে থেকে ঘিরে রাখে।
৯ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনী মাদারীপুর ছেড়ে ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে চলে যাবে এমন সংবাদ পেয়ে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে থাকে। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ঘটকচর থেকে সমাদ্দার ব্রিজের পশ্চিমপাড় পর্যন্ত সড়কের ৪ কিলোমিটার অংশ জুড়ে অবস্থান নেয় মুক্তিযোদ্ধরা। ৯ ডিসেম্বর ভোর ৫টার দিকে পাক হানাদার বাহিনী গোলবারুদ, অস্ত্র ও কনভয়সহ বাঙালি দোসর রাজাকার, আলবদর, আলসামস ও মুজাহিদ বাহিনী নিয়ে ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ঘটকচর ব্রিজ পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের আক্রমণ শুরু করে।
তুমূল যুদ্ধ শেষে ১০ ডিসেম্বর বিকেলে আত্মসমর্পণ করে পাক হানাদার বাহিনী। বিজয় পতাকা উড়ে মাদারীপুরে। শহীদ হন মাদারীপুরের সর্বকনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা সরোয়ার হোসেন বাচ্চু। এ যুদ্ধে ২০ পাক হানাদার সেনা নিহত হয়।
আত্মসমর্পণের পর মুক্তিযোদ্ধারা আত্মসমর্পণকারীদের অস্ত্র-শস্ত্র কভার করে সারা রাত সমাদ্দার ব্রিজ অবরোধ করে রাখেন। পরদিন ১১ ডিসেম্বর সকালে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় কলাগাছিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে। ১২ ডিসেম্বর তাদের মাদারীপুরে এনে সাব-জেলে বন্দি করে রাখা হয়।
মাদারীপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি পালন করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
আরবি/