বাংলাদেশ টেলিভিশন-বেতার শিল্পী সংস্থার নেতারা রোববার (১০ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাক্ষাৎ করতে এলে মন্ত্রী একথা বলেন।
শিল্পীদের সম্মানীর বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংবেদনশীলভাবে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন বাড়িয়ে দিতে।
মন্ত্রী বলেন, আপনারা যে সম্মানী পান এটা অপ্রতুল বলে আমি মনে করি। আপনাদের সম্মানী বাড়ানোর জন্য আমি ও আমার মন্ত্রণালয় আবারো অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে উত্থাপন করবো। যে হারে এখন পাচ্ছেন সেটা যথেষ্ট না।
‘একজন শিল্পী পারফর্ম করার জন্য বাসা থেকে আসতে যেতে তিন ঘণ্টা, সাজগোজ করতে হবে, গলা সারতে হচ্ছে, প্রস্তুতি নিতে হবে- তার জন্য মিনিমাম এক ঘণ্টা আগে আসতে হবে। পারফর্ম করবে আধা ঘণ্টা। সব মিলে পাঁচ ঘণ্টার ব্যাপার। শ্রমিকের ঘণ্টা হিসেবে মজুরি যদি ধরি তাহলে পাঁচ পাঁচে ২৫শ’ টাকা এমনিতেই পান আপনারা। একটা রিকশাওয়ালা যদি পাঁচশ’ টাকা ঘণ্টা বা দিনে কামাই করে, তাহলে তো আপনার সারা দিনের কামাই হয় না। কারণ প্রতিদিন তো আর আপনি বিটিভিতে গান গাইবেন না’।
সুতরাং আমি এটা মনে করি খুব যৌক্তিক, এটা বাড়ানো দরকার- বলেন তথ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, গীতকার, সুরকার, শিল্পীদের সম্পত্তির উপর রয়্যালিটি (সম্মানী) দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ দিন আলোচনা হচ্ছে, এটা আমাদের একটা ব্যর্থতা। এই রয়্যালিটির উপর আইন ঠিক করা দরকার। মোবাইল ফোনে কলার টিউনে গান শুনছেন, কিন্তু শিল্পীরা রয়্যালিটি পায় না, প্রতারিত হচ্ছে। টেলিভিশনে গান ১০ বার প্রচারিত হচ্ছে কিন্তু রয়্যালিটি পাচ্ছেন না, কিন্তু আইনত পৃথিবীর সব জায়গায় আপনার গান যেখানে প্রচার হবে রয়্যালিটি দিতে বাধ্য।
‘রয়্যালিটির ব্যাপারটি সূত্রবদ্ধ করার জন্য, ইন্টেলেকচ্যুয়াল প্রোপারটি রাইটস নিয়ে সংস্কৃতি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসেছিলাম। দেড়-দুই বছর হয়ে গেছে কিন্তু আইনটি সংষ্কার করতে পারেনি। এটা নিয়ে একটা সমস্যা হচ্ছে। রয়্যালিটির বিষয়টি সমাধান করা দরকার। এখনও এক বছর বাকি আছে। রয়্যালিটির বিষয়টি সমাধান করলে গীতিকার, সুরকার, কণ্ঠ শিল্পী প্রত্যেকেই উপকার পাবেন। ’
শিল্পীদের এককালীন থোক বরাদ্দ দেব কিনা বা বিশেষ শ্রেণির মর্যাদা দেব কিনা- এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমরা সাংবাদিদের কল্যাণ ট্রাস্ট করেছি। শিল্পীদের জন্য সংষ্কৃতিক মন্ত্রণালয়ে ট্রাস্ট আছে। কিন্তু সেটা যথেষ্ট নয়।
বিটিভির নীতিমালা ঠিকমতো পালন হচ্ছে না, নিজের নীতিমালা নিজেই মানছে না, নীতিমালা ভঙ্গ করছে বলে অভিযোগ করেন শিল্পীরা।
বেসরকারি টেলিভিশন বা বিটিভি কতভাগে কত অনুষ্ঠান করবে সে বিষয়ে সম্প্রচার আইনে গভীর আলোচনা দরকার আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, চট করে নির্দেশ দিলে চলবে না। আলোচনা করে ঠিক করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিদেশি অনুষ্ঠানের বাংলা সিরিয়াল নিয়ে বহুত হৈ চৈ হয়ে গেছে, বন্ধ করে দিতে বলেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে আলোচনা চলছে।
মন্ত্রী বলেন, বেসরকারি চ্যানেলগুলো দেশীয় সংষ্কৃতির চর্চা করবে কিনা, লাইসেন্সিং ও সম্প্রচার আইনে কতটুকু থাকবে তা দেখে ঠিক করতে হবে।
শিল্পীদের সমস্যা সমাধানে একটি কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
বাংলাদেশ টেলিভিশন-বেতার শিল্পী সংস্থার সভাপতি ড. ইনামুল হক, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আজমসহ নেতারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
এমআইএইচ/এসএইচ