ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পদ্মায় পাইল ড্রাইভ শুরু করেছে সর্বোচ্চ শক্তির হ্যামার

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
পদ্মায় পাইল ড্রাইভ শুরু করেছে সর্বোচ্চ শক্তির হ্যামার সর্বোচ্চ শক্তির হ্যামারে শুরু পাইল ড্রাইভ

ঢাকা: সাড়ে তিন হাজার কিলোজুল শক্তির বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হ্যামারটি পাইল ড্রাইভ শুরু করেছে পদ্মায়। যা দ্বিতল ১৫টি এয়ারবাসের চেয়ে বেশি জোরে আঘাত করতে সক্ষম।

সর্বোচ্চ শক্তির এ হ্যামারটি ১৩৫ মিটার গভীরে নিয়ে যেতে পারবে একেকটি পাইল। প্রতি মিনিটে হ্যামারটি ৩৫ থেকে ৪০ বার সজোরে পাইলে আঘাত করছে।

 
 
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে পদ্মার মাওয়া প্রান্তের একটি পিলারের পাইল ড্রাইভ শুরু করে ৩৫০০ কিলোজুলের হ্যামারটি।

জার্মানির (এমইএনসিক) তৈরি এ হ্যামার গত ১৭ নভেম্বর পদ্মাসেতু এলাকায় আনা হয়। এটিসহ পদ্মাসেতুর কাজে পাঁচটি হ্যামার আনা হয়েছে।
 
তবে দু’টি হ্যামার নষ্ট অবস্থায় পড়ে থাকায় পঞ্চম এ হ্যামারসহ এখন পদ্মাপাড়ে সক্রিয় হ্যামারের সংখ্যা তিনটি।

পদ্মাসেতু প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী সূত্র জানায়, সবচেয়ে শক্তিশালী ৩৭০০ কিলোজুলের আরেকটি হ্যামার বিকল অবস্থায় পদ্মায় পড়ে রয়েছে। এজন্য ৩৫০০ কিলোজুলের বর্তমান হ্যামারটি সবচেয়ে বেশি শক্তির অধিকারী। এটি এখন মাওয়া অংশের পিয়ার-২ তে পাইল ড্রাইভ শুরু করেছে।

৩৯ ও ৪০ নং পিলার স্প্যান ওঠানোর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত

প্রকৌশলীরা আরও জানান, এ হ্যামারটি এমিরেটস বা কাতার এয়ারওয়েজের ডাবল ডেকার (দ্বিতল) ১৫টি প্লেনের চেয়ে বেশি জোরে আঘাত করতে সক্ষম।
 
এদিকে, পদ্মাসেতুতে ২৪০০ ও ১৯০০ কিলোজুলের আগের দু’টি হ্যামার অনবরত কাজ করছে। তবে দুই ও তিন হাজার কিলোজুলের দু’টি হ্যামার বিকল অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

সেতু বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, মূল সেতু গড়তে পাইল নদীর গভীরে নিয়ে যাওয়াই চ্যালেঞ্জ। আর মাওয়া অংশে বেশ কিছু পিলারের গভীরতা নিয়ে জটিলতা থাকায় বেশি শক্তির হ্যামার লাগছে।
 
পদ্মাসেতু এলাকার প্রকৌশলীরা জানান, জাজিরার দিকে আরও দু’টি পিলার এখন পুরোপুরি প্রস্তুত স্প্যান ওঠানোর জন্য। যে দু’টি পিলার স্প্যান উঠবে সেগুলোতে পেইন্টিংয়ের কাজ চলছে। পেইন্টিং শেষ হলে কাজ শুরু হবে।
 
সেতু প্রকল্প সূত্র জানায়, নদীতে মূল সেতুর ২৪০টি পাইলের মধ্যে ৯৩টি পাইল ড্রাইভ হয়েছে। নদীর দুই পাড়ে সেতুতে ওঠার ট্রানজিশন পিলারে ৩২টি পাইলের মধ্যে ১৬টির কাজ শেষ হয়েছে। সব মিলিয়ে ২৭২টি পাইল হবে পদ্মাসেতুতে।
 
পদ্মাসেতুর প্রকল্প সূত্র জানায়, নদীতে যে ২৪০টি পাইল, তার মধ্যে জাজিরা পাড়ের কাছে ৩৭ এবং ৩৮ নম্বর পিলারের কাজ শেষ হওয়ার পর প্রথম স্প্যানটি বসানো হয়েছে। এখন ৩৯ ও ৪০ পিলারের শতভাগ কাজ শেষ। এখন স্প্যান ওঠানোর অপেক্ষা।  

পদ্মাসেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে ২৬টি পিলারের ১৫৬টি পাইলের নকশা (গভীরতা) চূড়ান্ত করা আছে। ফের নকশা প্রক্রিয়াধীন আছে ১৪টি পিলারের ৮৪টি পাইলের। এগুলোর ডিজাইন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। নদীর পাইল ড্রাইভ কাজে এখন পর্যন্ত এটিই অগ্রগতি।
 
দ্বিতল পদ্মা বহুমুখী সেতুর পুরোটা হবে স্টিল আর কংক্রিট স্ট্রাকচারে। সেতুর ওপরে দিকে থাকবে চারলেনের মহাসড়ক, আর নিচ দিয়ে যাবে রেললাইন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করে সেতু চালুর কথা রয়েছে।
 
বাংলাদেশে সময়: ১০৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
এসএ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।