যশোরের মণিরামপুর, কেশবপুর, ঝিকরগাছার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার দু’পাশে কিংবা ফসলি জমির ধারে সারিবদ্ধ খেজুরগাছের বাকল কেটে রস আহরণের উপযোগী করা হয়েছে। তবে গাছের চোখ কিংবা নলি-খিল (রস আহরণের জন্য ধারালো দা দিয়ে চোখ আকৃতির কাটা এবং মাটির হাঁড়ি বসানো ও রস আসার জন্য বাঁশের তৈরি বিশেষ উপকরণ) বসানো হয়নি।
যশোর পুলেরহাট ভায়া রাজগঞ্জ-বেলতলা সড়কের শহেলাহাট এলাকায় সোমবার (১১ ডিসেম্বর) কয়েকজন গাছিকে কোমরে দড়ি বেঁধে ধারালো দা নিয়ে খেজুর গাছে উঠে দ্বিতীয়বারের মতো বাকল পরিস্কার করতে দেখা গেলো।
জানতে চাইলে স্থানীয় গাছি ফজর মিয়া (৪৮) বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও আশ্বিন মাসের শেষ কিংবা কার্তিক মাসের শুরুর দিকে খেজুর গাছ থেকে রস আহরণের প্রথম ধাপ স্থানীয় ভাষায় গাছ তোলা (গত বছর গাছের যে পাশে কেটে রস আহরণ করা হয়েছে তার উল্টোপাশের বাকল কেটে পরিষ্কার) শুরু করি। এখন প্রতিটি গাছ রস আহরণের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। কিন্তু তুলনামূলক শীত না থাকায় আমরা অপেক্ষায় আছি। কারণ শীত না থাকলে খুব বেশি রস হয় না। আর শীত না থাকলে ভোর হতেই রসের সতেজতা নষ্ট হয়ে ঘোলাটে হয়ে যায়, যা পান করা কিংবা নলেন গুড় বা পাটালি তৈরির অনুপযোগী।
মণিরামপুর উপজেলার ত্রিপুরাপুর গ্রামের গাছি জামাল উদ্দিন (৪৫) বাংলানিউজকে বলেন, একটু শীত পড়লেই গাছের পরিস্কার অংশে ধারালো দা দিয়ে চোখ তৈরি করে এবং বিশেষ কায়দায় বাঁশের তৈরি নলি ও খিল বসিয়ে মাটির হাঁড়ি ঝুলাবো।
যশোর সদর উপজেলার খাজুরাসহ আশপাশের এলাকায় প্রতিবছরের মতো এবারও আগেভাগেই খেজুর রস সংগ্রহ শুরু হয়েছে। এসব এলাকার কিছু গাছি বাণিজ্যিকভাবে গুড় উৎপাদন এবং বিক্রিও শুরু করেছেন। এদের মধ্যে অসাধু কিছু গাছি অর্থের লোভে সামান্য রস জ্বাল দিয়ে এর সঙ্গে চিনি মিশিয়ে ভেজাল গুড়-পাটালি তৈরি করে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এতে যশোরের ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড় এবং প্রকৃত গাছিদের দুর্নাম হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
ইউজি/আরআর