সোমবার (১১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মুখে মাক্স পরা, ঝাড়ু হাতে এ দুই বিদেশিকে দেখা যায়।
তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তারা দুজনেই নেপালের নাগরিক।
নেপাল ও ভারতের কিছু অংশের পর গত ১১ দিন ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ঝাড়ু দিয়ে পরিচ্ছন্ন করার কাজে নেমেছেন তারা। এদেশে তিন মাস অবস্থান করবেন। এরপর রওনা হবেন শ্রীলঙ্কার উদ্দেশ্যে পরিবেশ রক্ষা ও জঞ্জালমুক্ত রাখার ব্রত নিয়ে পৃথিবীর পথে বেরিয়ে পড়া এই দুই সারথি।
জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘পর্বত দিবস’ উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছেন। সেখানেই শুরু করে দিলেন তাদের পরিচ্ছন্নতা অভিযান। যেখানে ময়লা পাচ্ছেন সেখানেই ঝাড়ু হাতে নেমে পড়ছেন তারা।
মৃত্যুর আগ পযর্ন্ত পৃথিবীর যে যে প্রান্তে যাওয়ার সুযোগ পাবেন, সেখানেই নিজেদের সাধ্যমতো পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাবেন বলে জানালেন সুশীলা।
নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডুর কাছে কীর্তিপুরে থাকেন সুশীলা আর রাজমান। সংসারের গাঁটছাড়া বাঁধলেও পরে সব চুকিয়ে পরিবেশ রক্ষার কাজে নেমে পড়েছেন রাজমান। তবে সুশীলা এখনও সংসারে পা বাড়াননি।
সংসারবিমুখ এই দুই নরনারী নিজেদের মতো করে পরিবেশ রক্ষায় নীরব অন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। গোটা পৃথিবীটাকে নিজের বাসস্থান বা বাসভূমি বলেই মনে করেন রাজমান ও সুশীলা।
তারা দু’জন হাতে ঝাড়ু তুলে নিয়েছেন দেখে ৮০ থেকে ১০০ জন নেপালি নাগরিক নিজ উদ্যোগে নেপাল পরিচ্ছন্নতার অভিযানে নেমেছেন বলে জানালেন রাজমান।
রাজমান বলেন, নিজের দেশটাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা বিশ্বের সব নাগরিকের দায়িত্ব। ‘আমরা না করলে কে করবে? দেশ আমার, আমিই পরিষ্কার রাখবো। বিশ্বের সকল দেশের সকল নাগরিকের জন্যই আমাদের এই বার্তা। আমাদের দেখে সবাই যেন অনুপ্রাণিত হয় নিজের দেশকে পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে।
রাজমান যখন কথা বলছিলেন তখন একমনে ঝাড়ু দিয়ে যাচ্ছিলেন সুশীলা।
ইংরেজি দুর্বল বলে সুশীলা কথা বললেন হিন্দিতে ।
জানালেন, কৈশোরকাল থেকে পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত। বন্ধু রাজমানের ডাকে ঝাড়ু হাতে প্রথমে নেপালে পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নামেন। পরিবেশে রক্ষার জন্য নিজের জীবন পযর্ন্ত বাজি রাখতে পেছপা হবেন না বলে জানালেন এই প্রত্যয়ী নারী।
৩০ নভেম্বর বাংলাদেশে এসেছেন রাজমান ও সুশীলা। এরপর থেকে রাত কাটাচ্ছেন রাস্তায়, ফুটপাতে।
'আমাদের কোনো ঘরবাড়ি নেই, যেখানে যাব সেখানে ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করে ঘুমিয়ে রাত কাটাবো' -বললেন রাজমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
এমসি/জেএম