ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফেঞ্চুগঞ্জে ট্রান্সফর্মারে আগুনে ক্ষতি ৩০ কোটি টাকা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
ফেঞ্চুগঞ্জে ট্রান্সফর্মারে আগুনে ক্ষতি ৩০ কোটি টাকা ফেঞ্চুগঞ্জের পালবাড়িতে বিদ্যুতের গ্রিড লাইনের ট্রান্সফর্মারে জ্বলছে আগুন/ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের পালবাড়িতে বিদ্যুতের গ্রিড লাইনের ট্রান্সফর্মারে আগুন লেগে অন্তত ৩০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনা খতিয়ে দেখতে গঠন করা হয়েছে উচ্চ পর্যায়ের চার সদস্যের তদন্ত কমিটি।

ঢাকার বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী (সঞ্চালন-১) এমদাদুল ইসলামকে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে পরিচালক পদবিধারী আরো তিনজনকে তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন।

এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায়  ফেঞ্চুগঞ্জ পালবাড়িতে বিদ্যুতের গ্রিড লাইনে ৩০০ এমপিএ (১৩২/২৩০) ট্রান্সফর্মারে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগে। নিমিষেই আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়লে জাতীয় গ্রিড লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও কুমিল্লার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।  

পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিটের সমন্বিত চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত বলে বাংলানিউজকে জানান গ্রিড সেকশনের কর্মকর্তারা।  

তবে আগুন লাগার বিষয়ে দিনভর মন্তব্য না করে লুকোচুরিই করেছেন কর্মকর্তারা। অবশ্য গ্রিড সেকশনে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া ট্রান্সফর্মারের তেল ধারণক্ষমতা ছিল ৪ হাজার ক্যালোর। এই ট্রান্সফর্মার ১৩২ কেভি ইম্পোর্ট ও ২৩০ কেভি বিদ্যুৎ সরবরাহ ক্ষমতাসম্পন্ন ছিল।  

সংশ্লিষ্টরা জানান, আগুন লাগার ঘটনায় অন্তত ৩০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে শুধু ট্রান্সফর্মারের মূল্যই ছিল অনুমানিক ১২ কোটি। এটি দেশের বাইরে থেকে আনতে খরচ হয়েছে কমপক্ষে আরো ৬ কোটি টাকা। এছাড়া অন্যান্য যন্ত্রপাতি পুড়ে ক্ষয়ক্ষতি ৩০ কোটি টাকায় গিয়ে দাঁড়াবে।  
 
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, এতো উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সফর্মারে আগুন লাগতে হলে ১৬০ ডিগ্রি উত্তপ্ত বা হাইটেনশন হতে হয়। অথবা ৩শ সেন্টিগ্রেড হাইটেনশন উত্তপ্ত হলে তেলেই আগুন তৈরি হয়। সেখানে মাত্র ১২০ ডিগ্রি উত্তপ্ত হওয়ায় আগুন লাগার কথা ছিল না।  

এর নেপথ্যে কারণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে নির্ণয় হয়েছে এইচডি বুশ ফেল করা। এতো দামি ট্রান্সমিটারে ব্যবহার করা হয়েছে দেশি কমদামি বুশ। ফলে বুশ ফেল করার কারণে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকে।  

গ্রিড স্টেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, ট্রান্সফর্মারে আগুন ধরার ঘটনায় বিদ্যুৎবিহীন এলাকায় এদিন বিকালে শ্রীমঙ্গল গ্রিড লাইন থেকে বিকল্প হিসেবে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। আর আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত অপর গ্রিড লাইন বন্ধ আছে বলে জানান এক কর্মকর্তা। কিন্তু বিকল্প এই গ্রিড লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিপর্যস্ত হবে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। এতে কয়েকটা জেলার গ্রাহককে বিদ্যুৎহীন থাকতে হবে।  

শঙ্কামুক্ত না হওয়ায় আশপাশের এলাকার লোকজন বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র সরে বসবাস করছেন।

সোমবার সকাল সোয়া ১০টায় সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ পালবাড়িতে বিদ্যুতের গ্রিড লাইনে ৩০০ এমপিএ ট্রান্সফর্মারে আগুন লাগে। সিলেট, মৌলভীবাজার, শাহজালাল সার কারখানা, ফেঞ্চুগঞ্জ বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র, গ্রিড স্টেশন ও উপজেলা দমকল বাহিনীর ৫টি ইউনিট একসঙ্গে কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ০৩০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
এনইউ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।