তাদের আচরণে মনে হয়, কারো কোনো নির্দেশনাই মানতে রাজি নন লেগুনা চালকরা।
সকল নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাড়া বৃদ্ধি করেছে মোহাম্মদপুর টু লিংকরোডগামী লেগুনা সার্ভিসগুলো।
শুধুমাত্র গাড়ির যন্ত্রাংশের মূল্যবৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে কোনো ধরনের আগাম নির্দেশনা ছাড়া এই ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। এছাড়া ভাড়া বৃদ্ধির অজুহাত হিসেবে যুক্ত হয়েছে রাজধানীর যানজট।
যেখানে আগে মোহাম্মদপুর থেকে লিংকরোড পর্যন্ত ভাড়া ছিলে ২৫ টাকা সেটি এখন এক ধাক্কায় বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩০ টাকা। মোহাম্মদপুর থেকে লিংকরোড পর্যন্ত গ্রিন মটরস ও দেশ মাটি পরিবহনের লেগুনা চলাচল করে থাকে।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) মোহাম্মদপুর থেকে লিংকরোডগামী লেগুনার চালক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
এ ক্ষেত্রে যাত্রীদের কাছ থেকে আরও বড় অভিযোগ পাওয়া যায় লেগুনা সার্ভিসগুলোর বিরুদ্ধে।
যাত্রীদের অভিযোগ, নতুন ভাড়ার চার্ট অনুযায়ী মোহাম্মদপুর থেকে লিংকরোড অথবা লিংকরোড থেকে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত ভাড়া ২৫ টাকার জায়গায় ৫ টাকা বেড়ে গিয়ে ৩০ টাকা হয়েছে। কিন্তু লেগুনা চালকরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে গুলশান-১,ওয়ারলেস, মহাখালী ও খামারবাড়ি যেখানেই যাত্রীরা নামেন তারা সেখান থেকে পূর্বের ভাড়া সঙ্গে ৫ টাকা বাড়তি যুক্ত করে ভাড়া তুলছেন তারা।
এ বিষয়ে পশ্চিম রাজাবাজারের বাসিন্দা মো.অপু বাংলানিউজকে বলেন, আমি প্রতিনিয়ত অফিস করতে খামারবাড়ি থেকে লিংকরোড যাতায়াত করি লেগুনায়। যেখানে চার্ট অনুযায়ী ভাড়া ১৮ টাকা। সেখানে তারা অনেক আগে থেকেই ২০ টাকা করে নিত। কিন্তু বাড়তি ভাড়ার নামে এখন ৭ বাড়িয়ে ২৫ টাকা নিচ্ছেন।
তবে ভাড়া ৫ টাকা বৃদ্ধি করে লেগুনার চালকরা নিচ্ছেন। এ অভিযোগ লেগুনা চালকদের বিরুদ্ধে।
তবে পূর্ব নির্দেশনা না দিয়ে অযৌক্তিক কারণ দেখিয়ে ভাড়া বৃদ্ধি করায় যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এই রোডে নিয়মিত যাতায়াতকরা যাত্রীরা বলছেন, অন্যকোনো পরিবহনে তো যন্ত্রাংশের মূল্যবৃদ্ধি বা যানজটের কারণে ভাড়া বৃদ্ধি করেনি। যন্ত্রাংশের মূল্যবৃদ্ধি হলে তো সব পরিবহনেই ভাড়া বাড়ানোর কথা। অন্য পরিবহণ কো ভাড়া বাড়ায়নি। এছাড়া রাজধানীতে যানজটের কারণে তো সবচে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীরা, এর জন্য কেন আমরা বাড়তি ভাড়া দেবো।
মোহাম্মদপুর থেকে লিংকরোডগামী লেগুনার নিয়মিত যাত্রী পলাশ বাংলানিউজকে বলেন, বাড়তি ভাড়া নেওয়ার মাত্র একদিন আগে চার্ট টানিয়ে অযৌক্তিকভাবে বেশি ভাড়া নিচ্ছে লেগুনাগুলো। সরকারের পক্ষ থেকে ভাড়া বাড়তির বিষয়টি নিয়ে কোনো মনিটরিং নেই। রাজধানীর পরিবহন কর্তৃপক্ষগুলো যখন যা মনে চাচ্ছে তাই করে নিচ্ছে। মনে হচ্ছে তাদের এসব কর্মকাণ্ড দেখার কেউ নেই।
ক্ষোভ প্রকাশ করে আরেক যাত্রী সুমন বলেন, এটা কোনো কথা যানজটের কারণে ভাড়া বাড়িয়ে দেবে। এটা কি মগের মুল্লুক নাকি যে যা চাইবে তাই করবে। আসল বিষয় হচ্ছে দেখার কেউ নেই।
রাজধানীর অন্য বেশ কয়েকটি রোডে চলা লেগুনা চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যন্ত্রাংশের মূল্যবৃদ্ধি কিংবা যানজটের কারণে তারা কোনো বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন না। মোহাম্মদপুর থেকে লিংকরোডগামী লেগুনাগুলো কেন ভাড়া বাড়িয়েছে তারা জানেন না। এছাড়া যন্ত্রাংশের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়েও তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
দেশ মাটি পরিবহনের হিসাব রক্ষক রহমত উল্লা এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, এই রোডে চলাচল করা সকল লেগুনা মালিকদের সঙ্গে কথা বলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মার্কেটে গাড়ির যন্ত্রাংশের মূল্যবৃদ্ধি ও মালিকদের বিনিয়োগ অনুযায়ী আয় না হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে ভাড়ার চার্টে গ্রিন মটরস পরিবহন কর্তৃপক্ষের ফোন নম্বর দেওয়া থাকলেও সেটা বন্ধ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা ডিসেম্বর ১২,২০১৭
এমএসি/বিএস