ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

একটি কলেই ছুটবে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস-অ্যাম্বুলেন্স

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
একটি কলেই ছুটবে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস-অ্যাম্বুলেন্স ৯৯৯ নম্বরে কল করলে মিলবে জরুরি সেবা

ঢাকা: জরুরি প্রয়োজনে শুধুমাত্র একটি ফোনকল; প্রয়োজন অনুযায়ী সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে যাবে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস কর্মী কিংবা অ্যাম্বুলেন্স। ভিকটিমকে উদ্ধার ও সহায়তা বা অপরাধীকে আটক করে পরিস্থিতি করবে নিরাপদ।

বিনামূল্যে কল করে ফায়ার সার্ভিস বা অ্যাম্বুলেন্স কিংবা জরুরি প্রয়োজনে পুলিশি সহায়তা দিতে ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯’ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে।
 
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর আব্দুল গণি রোডের পাশে ডিএমপির সেন্ট্রাল কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারে ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯’ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

‘৯৯৯’ অপারেট করবে পুলিশ।  
 
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল, পুলিশ মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন।
 
কোনো অপরাধ সংঘটিত হতে দেখলে, প্রাণনাশের আশঙ্কা দেখা দিলে, কোনো হতাহতের ঘটনা চোখে পড়লে, কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে ও অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন পড়লে ৯৯৯ ডায়াল করলেই সেবা মিলবে।
 
উদ্বোধনের পর জয় বলেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় দেশের উন্নয়নে বদ্ধ পরিকর। আওয়ামী লীগের সেবা শুধু আজকের নয়, ভবিষ্যতের। আমরা চাই সরকারের সব সেবা জনগণের দুয়ারে পৌঁছে দিতে।
 
প্রায় এক বছর আগে চালু হলেও জাতীয় এই কল সেন্টারে প্রাথমিকভাবে একইসঙ্গে ১২০টি কল রিসিভ করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শ।
 
৯৯৯ উদ্বোধনের পর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, জরুরি প্রয়োজনে একজন ব্যক্তির অনেক কিছু প্রয়োজন পড়ে। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস কিংবা পথে-ঘাটে দুর্ঘটনা হতেই পারে। আধুনিক বিশ্বে সব দেশেই এ সেবাটি তাৎক্ষণিক পাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। আমরাও বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তথ্য-প্রযুক্তির যুগে পদার্পণ করছি। আমরা ৯৯৯ সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছি।
 
জাতীয় জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে মাইলফলক অর্জন মন্তব্য করে কামাল বলেন, জরুরি সেবা বিদেশেও দেখেছেন, বাংলাদেশেও উপলব্ধি করবেন। যেটা সবসময় প্রধানমন্ত্রী স্বপ্ন দেখতেন এবং তার উপদেষ্টা একে একে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা ঢাকা সিটিকে সেইফ সিটি করার জন্য পরিকল্পনা করছি। আমরা সেজন্য কাজ করছি। ঢাকার পর বড় বড় শহর একের পর এক সেইফ সিটিতে নিয়ে আসতে পারি। আমরা যেমন উন্নয়নের মহাসড়কে দাঁড়িয়েছি, উন্নয়ন ধরে রাখতেও ২০২১, ২০৪১ সালে যে স্বপ্ন দেখছি, সেই জায়গায় যেতে নিরাপত্তার বিকল্প নেই। সেজন্য আমরা বসে নেই, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীগুলো কাজ করছে।
 
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল জানান, ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে ৯৯৯ চালু হওয়ার পর ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ২৭ লাখের বেশি কল রিসিভ করা হয়। ৬৫ শতাংশ পুলিশি সহায়তা, ৩১ শতাংশ ফায়ার সার্ভিস ও ৪ শতাংশ এসেছে অ্যাম্বুলেন্স সেবার জন্য। ১৬ কোটি মানুষের দেশে ১০-১২ কোটি মানুষ সরাসরি মোবাইল ব্যবহার করে, তারা সরাসরি ৯৯৯ সেবা পাবেন।
 
আইজিপি বলেন, জরুরি প্রয়োজনে মানুষ পুলিশকে ফোন করেন। কিন্তু যদি লম্বা নম্বর থাকে, কোন পুলিশ কী করে, শত শত পুলিশ, বিভিন্ন ইউনিট, সবার টেলিফোন নম্বর মনে রাখা সম্ভব না। আইজিপি হওয়ার পর মাথার মধ্যে চিন্তা ছিল শর্টকোড চালু করা। ২০১৬ সালে ‘১০০’ কোড চালু করা হয়।
 
‘পরবর্তীতে কালিয়াকৈরে হাইটেক পার্কে চালু হওয়া হেল্প ডেস্ক ৯৯৯-এ দেখা গেছে কলের ৬০ শতাংশ মানুষ চায় পুলিশি সহায়তা। আইসিটি উপদেষ্টা নির্দেশ দিলেন, যেহেতু পুলিশি সহায়তা বেশি চায়, তখন ৯৯৯-কে আমাদের হস্তান্তর করেন। ’
 
তিনি জানান, প্রাথমিক অবস্থায় একই সময় দেশের যে কেনো প্রান্ত থেকে ১২০টি কল রিসিভ করতে পারবো। যে কোনো জরুরি মুহূর্তে কল করলে পুলিশ সমস্যার কথা শুনবে এবং সঙ্গে সঙ্গে যে ইউনিট যেভাবে দরকার ঘটনাস্থলে চলে যাবে। আর যদি কোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তাহলে ফায়ার সার্ভিস চলে যাবে। একইভাবে কোথাও দুর্ঘটনা বা মুমূর্ষু রোগীর জন্য অ্যাম্বুলেন্স দরকার হয়, তাহলে অ্যাম্বুলেন্স চলে যাবে।
 
আইজিপি বলেন, আমাদের পুলিশি সেবা এবং ফায়ার সার্ভিসের সমস্যা হবে না, আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস। কারণ জাতীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে দেশব্যাপী অ্যাম্বুলেন্স সেবা এখনও হয়নি। তবে কালিয়াকৈরে ৯৯৯ সেবায় সাড়ে চার হাজার তালিকা করেছিল। তাদের সঙ্গে বসে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস কীভাবে জাতীয় পর্যায়ে করা যায়, সেই তালিকা ধরে মোটামুটি চলবে।
 
তার আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ৯৯৯ কলের মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্স সেবা শুরু করা হবে।
 
আইজিপি বলেন, এখন মোবাইল-টেলিফোনের মাধ্যমে কল রিসিভ করার সুবিধা থাকলেও ভবিষ্যতে ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সেবা দেওয়া হবে। আর কল রিসিভের সংখ্যা ৩০০-তে নিয়ে যাবো।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।