ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘বালতি থিওরি’ চলছে শাহজালাল বিমানবন্দরে!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
‘বালতি থিওরি’ চলছে শাহজালাল বিমানবন্দরে! শাহজালাল বিমানবন্দরের এমন দশা চলছেই। যেন দেখার কেউ নেই: ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: হযরত শাহ্জালাল বিমানবন্দর বাংলাদেশের প্রধান এবং সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ১ হাজার ৯৮১ একরজুড়ে বিস্তৃত এই বিমানবন্দর দিয়ে দেশের প্রায় ৫২ শতাংশ আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ওঠা-নামা করে। এ বিমানবন্দর দিয়ে বছরে আন্তর্জাতিক রুটের প্রায় ৪০ লক্ষ এবং অভ্যন্তরীণ রুটের ১০ লক্ষ যাত্রী আসা-যাওয়া করেন।

তবে দেশের প্রধানতম ও সর্ববৃহৎ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হলেও এখানে সমস্যার যেন শেষ নেই। পাশাপাশি এ-ও বলা যায়, এখানে এমন অনেক সমস্যা আছে যা জাতির উঁচু মাথাকে হেট করে দেয়।

যাত্রী হয়রানি, লাগেজ থেকে মালামাল চুরি, দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য, নোংরা অপরিষ্কার পরিবেশসহ নানা অবকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে এখানে।

বিমানবন্দরটির এসব সমস্যা নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ আর ক্ষোভের অন্ত নেই। গণমাধ্যমে এসব সমস্যার কথা বছরের পর বছর ধরে উঠে এলেও প্রতিকারের ব্যবস্থা খুব একটা নেওয়া হয় না।

তবে দু’একজন ব্যক্তির ব্যতিক্রমী ইতিবাচক উদ্যোগ আশা জাগালেও তাতে সার্বিক দুরাবস্থার চিত্রটার তেমন কোনো বদল ঘটে না। বিমানবন্দর এলাকার বর্তমান ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইউসুফ দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে পরিবেশের বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে, যাত্রীদের মালামাল চুরির ঘটনা অনেক কমেছে একথা সত্য। কিন্তু অন্যসব সমস্যা থেকেই গেছে। কেননা এসব সমস্যা সমাধান করার এক্তিয়ার তার নয়। যেমন অবকাঠামোগত সমস্যা।

শাহজালাল বিমানবন্দরের এমন দশা চলছেই।  যেন দেখার কেউ নেই: ছবি: বাংলানিউজসোমবার (১১ ডিসেম্বর)  বিমানবন্দরের ২ নম্বর টার্মিনাল ঘুরে যা দেখা গেল তা জাতি হিসেবে হতাশার। ছাদ চুঁইয়ে বৃষ্টির পানি পড়ছির টার্মিনালের ভেতরে। আর সেই পানি ঠেকাতে মেঝেতে বালতি পেতেছেন কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দরের টার্মিনালে এমন দৃশ্য দেখে অবাক হয়েছেন যাত্রী এবং দর্শনাথীরা। সমস্যাটা অবশ্য আজ বা কালকের নয়। কিন্তু যাদের এ সমস্যা দূর করবার কথা তাদের এসব নিয়ে মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না।

বিমানবন্দরের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী বাংলানিউজকে বলেন, বৃষ্টি এলেই একাধিক জায়গায় এভাবে পানি চুঁইয়ে পড়ে। এই পানি যাত্রীদের পায়ে পায়ে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে করে ফ্লোর পিচ্ছিল ও কর্দমাক্ত হয়ে যায়।

পরে ২ নম্বর টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কমপক্ষে ৮ জায়গায় ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ছে টার্মিনালের ভেতরে। কোথাও আবার বৈদ্যুতিক বাতির হোল্ডার আর তার বেয়ে এই পানি ভিতরে আসছে। ফলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুর্ঘটনা কবলিত হবার আশংকাও রয়েই যায়।

সৌদি আরব প্রবাসী কুমিল্লার জহুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমি ৭ বছর পরে দেশে এসে ইমিগ্রেশনে যে ব্যবহার পেয়েছি তা কারো কাছে বলার নয়। আমাদেরকে তো তারা মানুষই মনে করেন না। আর পরিবেশ? বাইরের এয়ারপোর্টে একটা কাগজও পড়ে থাকে না, আর আমাদের এখানে দেখেন ধুলা, কাদা (পানি দেখিয়ে)। পানি ঠেকাতে বালতি পাতা হয়েছে তবু কাজ হচ্ছে না। এটা দেখে বাইরের একজন অতিথি এসে আমাদের সম্পর্কে কি ধারণা করবে?

বেহাল ছাদ দিয়ে পানি চুঁইয়ে পড়া ঠেকাতে নাকি ছাদের ছিদ্র ও ফাটল বন্ধ করার চেষ্টা চলছে: ছবি: বাংলানিউজএ বিষয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কাজী ইকবাল করিম বাংলানিউজকে বলেন, এটা সংস্কারের কাজ চলছে। সিভিল এভিয়েশনের চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ওনারা ছাদে পুডিং লাগানোর কাজ করছেন।

‘পুডিং করে স্থায়ী সমাধান হবে কি?’ এই প্রশ্ন করা হলে জবাবে তিনি বলেন, ‘এতে কিছুটা সমাধান তো হবেই। তবে এর বাইরে আরো কি কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা চিফ ইঞ্জিনিয়ার সাহেবই বলতে পারবেন।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চিফ ইঞ্জিনিয়ার (সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ) সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীর দপ্তরে গেলে তিনি দেখা করতে রাজি হননি। পরে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বহু চেষ্টা করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
এসআইজে/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।