একই সঙ্গে তারা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভাতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদেরকে কর্মমুখী দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে উদ্যোগ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি সুপারিশ করেন।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি’ শীর্ষক এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও ওয়ার্ল্ড ভিশন দেশের দুটি জেলার ৪৬টি পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের সংগঠক, মানবাধিকার কর্মী, জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসক, ইউপি চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও দুঃস্থ জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি, এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট লক্ষমাত্রা অর্জন করেছি। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত দেশের সারিতে চলে যাবো।
আজকে বাংলাদেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আজ থেকে ১০ বছর আগের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশ এক হিসেবে দেখবেন না। ৭৫ পরবর্তী সময়ের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশ একেবারেই ভিন্ন। এখন একজন রিক্সাচালক দিনে ৮ থেকে ১০ কেজি চাল কিনতে পারে। আগে তারা ২ কেজি চাল কিনতে হিমশিম খেতো।
এ সময় খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলীর সঞ্চালনায় ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন: বর্তমান অবস্থার বিশ্লেষণ’ শীর্ষক গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আসিফ শাহান।
এ সময় ড. শাহান বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে অনেক কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে কিন্তু দুর্নীতির কারণে তা কার্যকর হচ্ছে না।
তিনি বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অতি দরিদ্রের তুলনায় তুলনামূলক কম দরিদ্রদের সহায়তা করে। এই বৈষম্য দূর না করতে পারলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হবে। অনেকে জানতেই পারে না কখন তাদের কার্ড দেয়া হচ্ছে এবং তারা কি সহায়তা পেতে পারে। এজন্য দরকার সর্বক্ষেত্রে প্রচারণা।
এ সময় তিনি সরকারী নীতিতে পরিমার্জন করে সহায়তার পরিমাণ জনপ্রতি ৫০০ থেকে বৃদ্ধি করে ১৫০০ টাকা করা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে উপার্জনক্ষম করার সুপারিশ তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, সামাজিক নিরাপত্তার পরিধি বাড়াতে হলে আমাদের রাজস্ব যথাযথভাবে দিতে হবে।
খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত সচিব আবু মোহাম্মদ ইউসুফ, ওয়ার্ড ভিশন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোয়ালিটি এস্যুরেন্সের পরিচালক চন্দন জেড গোমেজ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি’ প্রকল্পের আওতায় দিনাজপুর জেলার ৩টি ও জয়পুরহাট উপজেলার ২টি উপজেলায় ২ লাখ ৭৮ হাজার ৬৬৮ জন অতি দরিদ্র ও দুঃস্থ জনগণ সহায়তা পাবে। প্রকল্প শুরু হয় ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে, শেষ হবে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭
এএম/আরআই