পাকিস্তানের সামরিক জান্তা পরাজয় নিশ্চিত জেনে পরিকল্পিতভাবে বেছে বেছে হত্যা করেছিল জাতির কর্ণধার শিক্ষক, লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও চিকিৎসকদের। তারা চেয়েছিল, এদেশ স্বাধীন হলেও যেন মেধায়-মননে শূন্য হয়ে পড়ে, যেন স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ হলেও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।
১৯৭১ এর এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আল-শামস বাহিনী বাঙালির গর্বের ধন বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে পৈশাচিকভাবে হত্যা করে, যাদের অনেকের মরদেহই পাওয়া যায়নি। শোকার্ত হৃদয়ে জাতি স্মরণ করছে জাতির সেইসব শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। আন্তরিক সহমর্মিতা থাকবে তাদের পরিবার-পরিজনের প্রতি, যারা এখনও বয়ে চলেছেন স্বজন হারানোর গভীর বেদনা।
স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা থেকে শুরু করে চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক আগের মুহূর্ত পর্যন্ত যাদের আমরা হারিয়েছি- তাদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, মুনীর চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, শহীদুল্লাহ কায়সার, গিয়াসউদ্দীন, ডা. ফজলে রাব্বি, আবদুল আলীম চৌধুরী, সিরাজউদ্দীন হোসেন ও সেলিনা পারভীন, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা।
একাত্তরে মানবতার বিরুদ্ধে যারা অপরাধ করেছে, দীর্ঘ ৪১ বছর পর তাদের বিচার ও দণ্ড প্রদান চলছে। সেসব অভিযোগের মধ্যে বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞে সহযোগিতার অভিযোগও রয়েছে। বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ড একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধগুলোর মধ্যে সর্বাধিক পরিকল্পিত অপরাধ, ঠাণ্ডা মাথায় ঘটানো নিধনযজ্ঞ।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পৃথকভাবে ফুল দিয়ে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৭
এমআইএইচ/এসআই