ভাঙা সড়ক দিয়ে বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) দিনগত গভীররাতে গিয়ে দেখা গেছে, অন্য দিনে অযত্নে থাকলেও বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখা হয়েছে স্মৃতিসৌধ চত্ত্বর।
গভীররাতে গিয়ে দেখা গেছে, চারিদিকে পুলিশি পাহারা।
স্মৃতিসৌধের মূল বেদীর সামনে ফাঁসির মঞ্চ। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর যেসব যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে তাদের ছবিও সেখানে টানানো হয়েছে।
শ্রদ্ধা জানাতে আসা কয়েকজন বলেন, শুধু বুদ্ধিজীবী দিবসে নয় অন্য সময়ও স্মৃতিসৌধ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। এতে ১২ মাসই আমরা শহীদ সন্তানদের স্মৃতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করতে পারবো।
১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল। ফলে দিনটি বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক বেদনাঘন, স্মৃতিবাহী দিন। মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তিলগ্নে ১৪ ডিসেম্বর জাতির সেরা সন্তানদের একসঙ্গে ধরে নিয়ে রায়েরবাজারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। পাকিস্তানি দোসরদের হাতে সেদিন হাসিমুখে প্রাণ দিয়েছিলেন দার্শনিক গোবিন্দ চন্দ্র দেব, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, সাংবাদিক সেলিনা পারভীনের মতো আরও অনেকে। সেখানকার সেই ইটভাটার ওপরই নির্মিত হয়েছে আজকের বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ।
১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ সরকার স্মৃতিসৌধটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস যৌথভাবে স্মৃতিসৌধের নকশা প্রণয়নের জন্য জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতা আহ্বান করে। ২২টি নকশার মধ্যে স্থপতি ফরিদ উদ্দীন আহমেদ ও স্থপতি জামি-আল-সাফী প্রণীত নকশাটি মনোনীত হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হলে গণপূর্ত বিভাগ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। ১৯৯৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধের উদ্বোধন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৭
এমআইএস/আরআর