পুলিশ বলছে, হত্যাকারীরা মনজিলের পূর্ব পরিচিত ছিল। হত্যাকাণ্ডের আগে তারা মনজিলের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেছিল বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
এরই মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিশি নামের এক নারীকে আটক করা হয়েছে। তিনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন। পুরোপুরিভাবে মুখ খুলছেন না। হত্যার সঙ্গে এই নারীর সংশ্লিষ্টা থাকতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি।
এদিকে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত চার যুবককে শনাক্ত করতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) বাড্ডা জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) আশরাফুল করিম বাংলানিউজকে বলেন, সবদিক বিবেচনা করেই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে। জড়িতদের শনাক্ত করতে আমরা কাজ করছি। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এ ঘটনা সম্পর্কে এক নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, প্রণয়ঘটিত কারণে মনজিলকে হত্যা করা হয়েছে।
গত ১১ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর বাড্ডা এলাকার আফতাব নগরের বি ব্লকের ৩ নম্বর রোডের আটতলা ভবনের ছয় তলার একটি ফ্লাট থেকে মনজিল হক (২৮) নামে এক ব্যবসায়ীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পরদিন নিহত মনজিলের চাচা ফারুক মিয়া বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত মনজিল হকের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনায়। তার বাবা মৃত মইনুল হক। বাড্ডায় গাড়ি মেরামতের একটি ওয়ার্কশপের মালিক ছিলেন মনজিল। আফতাব নগরের বি ব্লকের ৩ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাড়ির ছয়তলায় নিজ ফ্ল্যাটে একাই বসবাস করতেন তিনি।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছে, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ভবনের নিরাপত্তাকর্মী আবুল কালাম আজাদ জানান, মনজিলের সঙ্গে যোগাযোগ করেই ওইদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিনে এই নারী (নিশি) নিহতের ফ্ল্যাটে যান। এর ঘণ্টা খানেক পর আরো চার যুবক আসেন, তারাও মনজিলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
১৫ মিনেটের মধ্যেই ওই চার যুবক নিচে নেমে আসেন এবং দ্রুত চলে যান। কিছুক্ষণ পর ওই নারী (নিশি) চিৎকার করতে করতে নিচে নেমে আসেন। এরপর ওই নারীও চলে যান।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, মনজিলের বিবাহ বিচ্ছেদের পর থেকে তিনি এই ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। তবে নিশি নামের এই নারী প্রায় সময় মনজিলের ফ্ল্যাটে আসতেন।
তারা বলেন, আমরা ধারণা করছি, এই নারীর সঙ্গে মনজিলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না তিনি। তার কাছে বিষয়গুলো জানতে চাওয়া হচ্ছে।
ওইদিন ফ্ল্যাটে এই নারী প্রবেশের পরেই খুনিরা প্রবেশ করে। হত্যাকাণ্ডের সময় এই নারী ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি।
বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, এই হত্যাকাণ্ডে চারজন অংশ নিয়েছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তবে এই ঘটনায় এক নারীকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
এদিকে, নিহত মনজিলের চাচা ফারুক মিয়া জানান, কযেক মাস আগে মনজিলের স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়। এরপর থেকে তিনি একাই আফতাব নগরের ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন। পাশাপাশি বাড্ডায় তিনি একটি ওয়ার্কশপ চালাতেন।
কারা কি কারণে মনজিলকে হত্যা করেছে সেটি আমাদের জানা নেই। মনজিলের সঙ্গে কারো শত্রুতা আছে কিনা সেটি তিনি কোনো দিন আমাদেরকে জানান নি।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭
এসজেএ/জেডএম