বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে ইমিগ্রেশনে গিয়ে গেটটি কাস্টমস রাজস্ব কর্মকর্তা নমিতা রানী স্বাক্ষরিত সিলগালা অবস্থায় দেখা যায়।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক(ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম ও বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনারের উপস্থিতিতে এই গেট সিলগালা করা হয় বলে জানা যায়।
এর আগে গত রোববার (২৪ ডিসেম্বর) চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ভবনে প্রবেশের প্রধান ফটক সিলগালা করে তালা ঝুলিয়ে দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
এদিকে কাস্টমস-ইমিগ্রেশন ভবনে প্রবেশের প্রধান দুটি গেটই সিলগালা হওয়ায় সরাসরি ঢাকা-কলকাতা-আগরতলার মধ্যে যাতায়াতকারী সৌহার্দ্য পরিবহন যাত্রীদের ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস কার্যক্রমে বিড়ম্বনা বেড়েছে।
ঢাকা-কলকাতা সৌহার্দ্য পরিবহন গ্রীনলাইনের বেনাপোল শাখার ম্যানেজার নবীন বাংলানিউজকে জানান, পরিবহনের যাত্রীরা এ দুটি গেট দিয়ে আগে যাতায়াত করতো। এখন সবগুলো বন্ধ থাকায় যাত্রীদের মালামাল নিয়ে উল্টো নোম্যান্সল্যান্ড দিয়ে ঘুরে ইমিগ্রেশনে ঢুকতে হচ্ছে। আবার ওই পথে উল্টা বের হতে হচ্ছে। এতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তিনি সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে যাত্রী প্রবেশে বিকল্প স্থায়ী পথ দ্রুত তৈরির দাবি জানান।
জানা যায়, কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন ভবনের প্রধান দুটি প্রবেশ গেটে দায়িত্বে থাকা ইমিগ্রেশন পুলিশ, কাস্টমস ও আনসার সদস্যরা ট্রাভেল ট্যাক্স ফাঁকির কার্যক্রমে সহযোগিতা করতেন। এছাড়া কেউ কেউ ভবনের মধ্যে ব্যক্তিগত ও সরকারি গাড়ি ঢুকিয়ে ওই গাড়িতে মালামাল পাচার করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এসব কার্যক্রম বন্ধের জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একাধিক বার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আর এসব নিয়েই কাস্টমস-পুলিশের এই দ্বন্দ্ব। অবশেষে তা প্রতিরোধে বাধ্য হয়ে দুটি গেটই বন্ধ করে কাস্টমস।
বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা কামরুজ্জামান দুটি গেট সিলগালার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, অনিয়ম বন্ধ আর শৃঙ্খলা ফেরাতে কাস্টমস কমিশনার স্যারের নির্দেশে গেট দুটি সিলগালা করা হয়েছে। সৌহার্দ্য পরিবহনের যাত্রীরা নোম্যান্সল্যান্ড ঘুরে ও সাধারণ যাত্রীরা প্যাসেনজার টার্মিনাল হয়ে যাতায়াত করছেন বলেও জানান তিনি।
কাস্টমস অফিসার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন জানান, দুপক্ষের মধ্যে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনা নিরসনে উধ্বর্তন কর্মকর্তারা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন একটু দুর্ভোগ হলেও আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বেনাপোল আন্তর্জাতিক কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন ভবনকে যাত্রী সেবায় একটি মডেল হিসাবে তৈরির পরিকল্পনা চলছে।
এর আগে গত বুধবার(২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রী শাখাওয়াত হোসেনসহ (পাসপোর্ট নং- বিএম-০৭০৫৭২০) তিনজন ভারত থেকে ফিরে ইমিগ্রেশন পার হওয়ার পথে কাস্টমস সদস্যরা ঘুষ দাবি করে। বিষয়টি ইমিগ্রেশন ওসিকে জানান শাখাওয়াত। ওসি বিষয়টি কাস্টমস রাজস্ব কর্মকর্তাকে জানালে যাত্রীকে লাঞ্ছিত ও ওসিকে অপমান করা হয়। ইমিগ্রেশনের অন্য পুলিশ সদস্যরা প্রতিবাদ জানালে কাস্টমস ও পুলিশের মধ্যে হাতাহাতি, ভবন ভাংচুরসহ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে কাস্টমসের বিরুদ্ধে বেনাপোল পোর্ট থানায় অভিযোগ করেন শাখাওয়াত। আর কাস্টমস সদস্যরা অভিযুক্ত পুলিশের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। এক পর্যায়ে ইমিগ্রেশন ওসিকে বদলি করা হয়। কাস্টমসের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭
জেডএম/