বুধবার (০৩ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল গ্রুপের জুনিয়র কর্মীদের সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক রাসেল গ্রুপের এ সংঘর্ষ ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সভাপতি গ্রুপের সমর্থকরা সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহানকে কুপিয়ে জখম করে।
পরে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বাড়তে থাকে এবং সকাল দশটার দিকে সংঘবদ্ধ হয়ে প্রথম দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পরেন দু’গ্রুপ। এসময় আহত হন অপর ছাত্রলীগ কর্মী জবি সমাজকর্ম বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী স্বপন।
এসময় সভাপতি গ্রুপের কর্মীদের ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিয়ে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের পাশে অবস্থান নেয় সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মীরা। পরে ঘণ্টা পার হতে না হতেই মূলফটক দিয়ে স্বদলবলে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন সভাপতি। এসময় পুলিশ বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের উপস্থিতিতেই সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপের কর্মীদের ধাওয়া দেয় সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা। পরে বিচ্ছিন্নভাবে সভাপতির উপস্থিতিতেই তার কর্মীরা বিজ্ঞান অনুষদ এবং কলা অনুষদে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গণপিটুনি দেয়।
অভিযোগ রয়েছে, কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থীকেও এসময় শারিরিকভাবে লঞ্চিত করে বিক্ষিপ্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা।
এরপর পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে আসে।
এসময় পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার বদরুল ও লালবাগ ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহীম খান বলেন, গতকাল দুই গ্রুপ ক্যাম্পাসে কিছু ঘটবে না মর্মে কথা দিয়ে গেলেও, সকালে মানুষ ঘুম থেকে উঠার আগেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। তারা দ্রুত শান্ত হয়ে না গেলে বা ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিস্থিতি না ফেরালে, সভাপতি সাধারণ সম্পাদককেও ছাড় দেওয়া হবে না।
এর কিছু পরেই পরিস্থিতি শান্ত হয়। এরপর থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
জবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল বাংলানিউজকে বলেন, মঙ্গলবার ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে কথা কাটাকাটি নিয়ে আজকে এ ঘটনা ঘটেছে। এখন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের একটি টিম এসেছে, তাদের নিয়ে কারা অভিযুক্ত তাদের খুঁজে বের করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এ বিষয়ে কথা বলতে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে জবি প্রক্টর ড. নুর মোহাম্মদ বলেন, এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেয় নি। কিন্তু আমরা সপ্রণোদিত হয়ে তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি। আমরা খুঁজে দেখছি কে বা কারা ক্যাম্পাসে এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাচ্ছে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের ফোনে পাওয়া যায় নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৮
ডিআর/ওএইচ/