ফলে ১১২ বছরের বৃদ্ধকে ইজিবাইকের মাধ্যমে মিরপুরের আমলা ইউনিয়নের কচুবাড়িয়া গ্রামে নেয়া হয়।
বৃদ্ধের ছেলে দুলাল হোসেন বলেন, আমরা অ্যাম্বুলেন্স চালকদের কাছে জিম্মি।
হঠাৎ করেই বুধবার (১৭ জানুয়ারি) কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সকাল থেকে শুরু হয় অ্যাম্বুলেন্স ধর্মঘট। মূলত কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালকরা এ ধর্মঘট শুরু করেছে। ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগী ও স্বজনরা। অনেক স্বজন মরদেহ নিয়েও পড়েছেন বিপাকে। এমনকি উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা রোগীদেরও বাইরে নেওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতালে পড়েই ধুকছেন এসব রোগীরা ফলে দুশ্চিন্তার যেন অন্ত নেই স্বজনদের।
অন্যদিন যেখানে হাসপাতালের গেটে অ্যাম্বুলেন্সের সারি থাকে সেখানে আজ রয়েছে ইজিবাইক। এছাড়া ভাড়াই চালিত মাইক্রোবাসও হাসপাতাল গেটে ভিড়তে দিচ্ছে না অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। ইজিবাইক আর পাখি ভ্যানে করে হাসপাতালের সীমানার বাইরে গিয়ে তারপরে পাওয়া যাচ্ছে মাইক্রোবাস।
কুষ্টিয়ার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থাকা স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স চালকরা জানায়, স্থানীয় দালালরা তাদের কাছ থেকে চাঁদা চায়। হঠাৎ করেই দালালরা চাঁদা দাবি করতে শুরু করেছে।
অ্যাম্বুলেন্স চালকরা জানায়, কোনো রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এ হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলে চাঁদা চাইছে স্থানীয় দালালরা। হাসপাতাল গেট থেকেই তারা চাঁদা দাবি করে। কুষ্টিয়া থেকে রোগী রাজশাহী নিলে ৫০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। আর ঢাকায় নিতে গেলে দিতে হয় ১০০ টাকা।
অ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুস সালাম বলেন, হঠাৎ করেই চাঁদাবাজ আমদানি হইছে। এতোবছর অ্যাম্বুলেন্স চালাই কাউকে এক কড়িও দেইনি। আর এখন নাকি খ্যাম (ভাড়া) প্রতি ট্যাকা দেয়া লাগবি। টাকা না দেওয়ায় শামীম হোসেন নামের আমাদের এক চালককে চাঁদাবাজরা মারছে।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, সরকারের কাছে নিজেদের নিরাপত্তা চেয়েছেন চালকরা। এমনকি যতদিন চাঁদা দেয়া বন্ধ না হবে ততদিন অ্যাম্বুলেন্সের চাকাও ঘুরবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন চালকরা।
এদিকে অনির্দিষ্টকালের এ ধর্মঘটের প্রথমদিনে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ব্রেন স্টোকে আক্রান্ত জরুরি বিভাগের রোগীরা।
অন্যদিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বুধবার দুপুরে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স বা কোনো মাইক্রোবাস না পেয়ে একটি মরদেহ অটোবাইকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কুষ্টিয়ার মিরপুরে।
এছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা একজন রোগিকে দেখা গেছে পাখি ভ্যানে করে নিয়ে যেতে।
কুষ্টিয়া জেলা অ্যাম্বুলেন্স সমবায় সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, অ্যাম্বুলেন্সের চালকরা ভয়ে আছেন। তারা মারধরের শিকার হতে চাইছেন না। তাই অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ আছে। আশানুরূপ সুরাহা না হলে অ্যাম্বুলেন্সসেবা বন্ধ থাকবে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকার বাংলানিউজকে জানান, হাসপাতালের বাইরের অ্যাম্বুলেন্সগুলো না চললেও আমাদের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালু রয়েছে।
তিনি দাবি করে বলেন, অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ থাকলেও সাধারণ রোগী ও স্বজনদের তেমন একটা ভোগান্তি হচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ০০২৭ ঘণ্টা, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৮
এমআইএস/আরএ