থরে থরে সাজিয়ে রাখা এসব বাহারি আইটেমের পিঠা একসঙ্গে দেখলে চোখ অনেকটা ছানাবড়া হয়ে ওঠে।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বগুড়া শহরের শহীদ টিটু মিলনায়তনে দিনব্যাপী আয়োজিত পিঠা উৎসবের চিত্র এমন।
পিঠা উৎসবের উদ্বোধনের আগেই পুরো প্রাঙ্গণ দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অতিথিরা মেলা প্রাঙ্গণে চলে আসেন। এরপর তারা পিঠা উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। অতিথিরা একে একে মেলায় অংশ নেওয়া স্টলগুলো পরিদর্শন করেন।
তার পরপরই উৎসবে উপস্থিত দর্শনার্থীরা স্টলগুলোয় ভিড় করতে থাকেন।
শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মেলায় পিঠার স্টল দিয়েছে। এসব স্টলে পাঁচ টাকা থেকে পঞ্চাশ টাকা মূল্যে পিঠা বিক্রি করা হয়। মেলায় আগত দর্শনার্থীদের বিভিন্ন স্টল থেকে নানা আইটেমের পিঠা কিনে স্বাদ আস্বাদন করতে দেখা গেছে।
এসব স্টলে পাটিসাপটা, দুধ পুলি, ক্ষির পুলি, ঝাল পুলি, নাট পিঠা, চিকেন রোল, পুডিং, নকশি পিঠা, সন্দেশ পিঠা, মুগ ডালের পিঠা, মুড়ির মোয়া, তিলের মোয়া, কাউনের পায়েস, নারিকেলের নাড়ু, গুড় নারিকেলের নাড়ু, নকশি হালুয়া, বকুল পিঠা, সাবু পিঠা, চিড়ার মোয়া, সুজির পিঠা, নাটিকা পিঠা ও দুধ পিঠা দেখা গেছে।
ফারিহা, মৌতুজা, মিম, লাকী, সাবা, মালিহা–এরা সবাই বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থী। তারা বাংলানিউজকে জানান, গ্রাম বাংলার সংস্কৃতির অংশ হিসেবে পিঠা উৎসবে যোগ দিয়েছেন। এখানে বাহারি পিঠার পসরা সাজিয়ে দোকান দিয়েছেন। এতে পিঠা বিক্রিও হচ্ছে। পাশাপাশি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে নিজেদের পরিচয়ও ঘটছে।
শাহিনুর রহমান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ব্যস্ততার কারণে শীতের নানা ধরনের পিঠা খাওয়া হয়ে ওঠে না। মেলায় এসে পছন্দের পিঠাগুলো কিনে খেয়েছি।
কলেজ থিয়েটারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতির অন্যতম একটি অংশ পৌষ সংক্রান্তি। এদিন গ্রামে পিঠার আয়োজন করা হয়। মেয়ে-জামাইকে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে আসা হয় শীতের বিভিন্ন ধরনের পিঠা খাওয়ানোর জন্য। শহুরে ব্যস্ত জীবনের ভিড়ে এই ঐতিহ্যগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে শিশুরা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের রকমারি পিঠার সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠতে পারছে না। সেই ঐতিহ্যকে তাদের সামনে তুলে ধরতে এ আয়োজন যোগ করেন সিজুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৮
এমবিএইচ/আরআর