এখানকার দোকানিদের বড় দোকান ও শপিংমলের মতো খরচ না থাকায় একই মানের পোশাক সস্তায় বিক্রি করতে পারে। নারী ও শিশুদের পছন্দের পোশাক যেমন-সালোয়ার-কামিজ, টু-পিস, থ্রি-পিস ও গেঞ্জিসহ বিভিন্ন ধরনের বাহারি পোশাক পাওয়া যায় বউ বাজারে।
এছাড়া পাওয়া যায় শাড়ি-বোরখাসহ পোশাক তৈরির বিভিন্ন প্রকার থান কাপড়। শপিং সেন্টারগুলোতে পাওয়া যায় এমনই পোশাক বা একই মানের পোশাক বউ বাজারে সস্তায় বিক্রি হয় এ কারণে বউ বাজারে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় হয়। দিনাজপুর শহরের মালদহপট্টি ও বাসুনিয়াপট্টির ফুটপাতে প্রতি শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বসে এ বউ বাজার। এ বাজারের সব দোকানিরা শহরের বড় বড় দোকান বা শপিংমলের কর্মচারী। তারা সপ্তাহের ছয়দিন মহাজনের কাজ শেষে শুক্রবার নিজেদের ব্যবসা পরিচালনা করেন।
বউ বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, দোকান ভাড়া, কর্মচারী বেতন, বিদ্যুৎ বিল, সাজসজ্জার খরচ উঠাতেই বড় দোকান বা মার্কেটে পাওয়া সমমানের পোশাক বা কাপড়ের দাম বেশি হয়। এসব কোনো খরচ লাগে না বলেই বউ বাজারে সস্তায় পোশাক বা কাপড়া পাওয়া যায়। সস্তায় পোশাক বা কাপড় পাওয়া যায় বলেই সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার বউ বাজারে ক্রেতারা ভিড় করে।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বউ বাজারে পোশাক কিনতে আসা শহরের বালুবাড়ী এলাকার বাসিন্দা রিনা বেগম বাংলানিউজকে জানান, বড় মার্কেটে যেসব মানের পোশাক পাওয়া যায় এখানেও একই মানের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু পার্থক্য হলো দামে। তাদের থেকে এখানে দাম অনেক কম। কম দামে একই মানের পোশাক পাওয়া যায় এ বউ বাজারে। তাই সপ্তাহের শুক্রবার দিন পরিবারের সদস্যদের পোশাক এখান থেকেই ক্রয় করি। দিন দিন এই বউ বাজারের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। আমি গত তিন বছর থেকে আমাদের প্রয়োজনীয় পোশাক বউ বাজার থেকেই কিনছি। এখানে দরিদ্র পরিবারের পাশাপাশি উচ্চবিত্ত পরিবারের নারীরাও পোশাক কিনতে আসছে।
বউ বাজারের দোকানি মো. নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এখানকার সব শহরের বড় দোকানের কর্মচারী। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন শহরের সব দোকান বন্ধ থাকে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাড়িতে না বসে বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন সব কর্মচারীরা মিলে এই বউ বাজার দেওয়ার উদ্যোগ নেয় তিন বছর আগে। তখন থেকে একই নিয়মে বউ বাজার পরিচালনা হয়ে আসছে। প্রথমের দিকে ২০ থেকে ২৫টি দোকান মালদহপট্রি এলাকায় শুরু করলেও বর্তমানে মালদহপট্রি ও বাসুনিয়াপট্রি এলাকায় প্রায় শতাধিক দোকান বসে। আমাদের দোকান ভাড়া, কর্মচারী বেতন, বিদ্যুৎ বিল, ডেকোরেশন খরচ না থাকায় বড় দোকানের মতো সমমানের পোশাক কম দামে বিক্রি করতে পারছি। এখানে কম দামে ভালো মানের পোশাক পাওয়া যায় তাই ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকে। আগামীতে আরো জনপ্রিয়তা বাড়াতে দোকানিরা কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৮
এএটি