শনিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে আক্ষেপ করে খুলনা মহানগরীর গোয়ালখালী কবরস্থান সংলগ্ন রাস্তার উপরের ময়লার স্তূপের বর্ণনা দিয়ে এ আক্ষেপ ঝাড়েন ব্যবসায়ী মিরাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, রাস্তাটি দেখলে মনে হয় উন্মুক্ত ডাস্টবিন।
খুলনা সদর হাসপাতালের পাশে স্থায়ীভাবে ময়লা ফেলার স্তূপ থাকায় খোদ সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম আবদুর রাজ্জাকও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালের গেটের সামনে স্তূপ করে ময়লা জমা রাখে সিটি কর্পোরেশন। এতে ছড়িয়ে থাকে আবর্জনার দুর্গন্ধ। অসুস্থ রোগীরা বাধ্য হয়ে নাক চেপে প্রবেশ করেন হাসপাতালে। এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের কাছে বার বার আবেদন ও ডিসি অফিসে মিটিংয়ে আবেদন করেও কোনো লাভ হয়নি। কেডিএ এভিনিউ রোডের বাসিন্দা কামরুল মনি বলেন, রাশিদা মেমোরিয়াল ক্লিনিক ও বাংলালায়ন অফিসের সামনের সড়কের ময়লা দুপুর ১২টার পরও নেওয়া হয় না। ময়লার দুর্গন্ধে রাস্তায় চলার সময় বমি আসে।
তিনি অভিযোগ করেন, দায়িত্ববানদের অবহেলা ও কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনায় খুলনা যেন ময়লা-আবর্জনার বৃহৎ ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গোয়ালখালী কবরস্থান সংলগ্ন রোড, কেডিএ এভিনিউ রোড, সদর হাসপাতালের সামনের সড়ক ছাড়াও পিটিআই মোড়, নিরালা মোড়, বাদশা মিয়া ক্লিনিকের সামনে, খালিশপুর ফায়ার ব্রিগেডের পাশে, খালিশপুর কাস্টমস অফিসের পাশে, ফারাজীপাড়া মোড়, নতুন বাজার, তেঁতুলতলা কদমতলা, হোটেল সিটি ইনের বিপরীত পাশে, জিলা স্কুলের সামনেসহ আরও বেশ কিছু জায়গায় বর্জ্য পড়ে থাকে সারাদিন। বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটির নিচেও ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখা হয়। যা প্রধান সড়কের উপরও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে। অনেক জায়গায় ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বসানো হয়েছে বড় আকারের ডাস্টবিন। কিন্তু ডাস্টবিনে না ফেলে ফুটপাতেই ময়লা ফেলছেন কিছু মানুষ। নগরবাসীর অভিযোগ, রাস্তাঘাট, অলিগলি, আবাসিক, বাণিজ্যিক এলাকা-সর্বত্রই ময়লা-আবর্জনার ছড়াছড়ি। ময়লার উৎকট গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে থাকছে। বাধ্য হয়ে রাস্তায় চলাচলকারী ও বাসিন্দাদের চরম দুর্গন্ধ সয়ে বাস করতে হচ্ছে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও পথচারীরা পড়ে যাচ্ছেন মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। সূর্য ওঠার আগে ময়লা নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও নেয় দুপুরে কিংবা বিকেলে। মাঝে মধ্যে দুই এক স্থানের ময়লা দুইদিন পরও নেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) কনজারভেন্সি অফিসার মো. আনিসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, পরিচ্ছন্নকর্মীদের ময়লা নিতে নিতে দুপুর হয়ে যায়। কেননা বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নির্দিষ্ট স্থানে সকালে ময়লা আসে না। ১২শ’ পয়েন্টে ৫৫/৫৬টি গাড়িতে ময়লা ফেলা হয়। ৬শ’ পরিচ্ছন্নকর্মী ময়লা অপসারণের কাজে নিয়োজিত। তারা দিনে তিনবার ময়লা সরিয়ে নেন।
তবে তার উত্তরে সমস্যা সমাধানের কোনো সুরাহা পাওয়া গেলো না। তাতে নগরবাসীকে আর কতোদিন এভাবে দুর্গন্ধ সায়ে থাকতে হবে তাই এখন দেখার বিষয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৮
এমআরএম/জেডএস