তিনি বলেছেন, উচ্চ আদালতে গিয়ে কিছু মানহীন বেসরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন নিয়ে আসছেন কিছু আইনজীবী, এই সংসদেও অনেক আইনজীবী রয়েছেন। তারা এইসব কাজ করছেন, দুঃখ লাগে এসব কাজের জন্য।
রোববার (২১ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাসের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এসব বেসরকারি মেডিকেলে ছাত্র ভর্তি হলে তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে? ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ তো নষ্ট হয়ে যাবে। শুধুমাত্র টাকার জোরে বড় বড় আইনজীবী ধরে মিথ্যা তথ্য দিয়ে এসব মানহীন বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো আদালত থেকে ভর্তির আদেশ নিয়ে আসছে।
তিনি আরও বলেন, সুনির্দিষ্ট নীতিমালা মেনেই বেসরকারি মেডিকেল কলেজের অনুমতি দেওয়া হয়। অনুমোদন পাওয়া এসব কলেজের সামগ্রিক কার্যক্রম কঠোরভাবে মনিটরিং করা হয়। তবে কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে যাদের কোনো নিজস্ব ক্যাম্পাস নেই। শিক্ষক, পাঠাগার, ল্যাব কিছুই নেই। এজন্য গত তিন বছর ধরে এসব মানহীন হাসপাতালগুলোতে ছাত্র ভর্তি অনুমোদন স্থগিত করা হয়েছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন স্থগিত করা এসব মানহীন কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতে যায়। টাকার জোরে বড় বড় আইনজীবী নিয়োগ করে। আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তির আদেশ নিয়ে আসেন। এখন তারা আমাদের ওপর চাপ দিচ্ছে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন দিতে। কিন্তু আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, কোনো মানহীন বেসরকারি মেডিকেল কলেজকে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন দেওয়া হবে না।
প্রত্যেক বিভাগে বিশেষায়িত হৃদরোগ হাসপাতাল
সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশে হৃদরোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এ কারণে সরকার প্রত্যেকটি বিভাগীয় শহরে একটি করে স্বতন্ত্র হৃদরোগ বিশেষায়িত হাসপাতাল (উন্নতমানের হার্টের চিকিৎসার জন্য) পর্যায়ক্রমে স্থাপনের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।
তিনি জানান, বর্তমান সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এরইমধ্যে সারাদেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নতমানের হার্টের চিকিৎসার জন্য করোনারি কেয়ার ইউনিটসহ আলাদা হৃদরোগ বিশেষায়িত বিভাগ ও কিডনি বিভাগ খোলা হয়েছে। এসব হৃদরোগ বিভাগগুলোতে উন্নতমানের হৃদরোগ চিকিৎসার সব ধরনের ওষুধ (ব্যয় বহুলসহ) বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে এবং বেশ কিছু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনজিওগ্রামসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, দেশের নামিদামি কিছু কোম্পানির কিছু কিছু ব্রান্ডের ওষুধ নকল হয় যা অত্যন্ত নগণ্য। এসব নকল-ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসছে।
সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানান, রোহিঙ্গা শিশুদের দ্রুত টিকাদানের আওতায় আনতে সরকার ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। রোহিঙ্গা শিবিরে জন্ম নেওয়া নবজাতকের জন্ম নিবন্ধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে এবং ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় জন্ম নিবন্ধনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৮
এসএম/জেডএস