ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অপরিকল্পিত শিল্প কারখানা-ইটভাটায় কমছে কৃষিজমি

মো. রাজীব সরকার, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৮
অপরিকল্পিত শিল্প কারখানা-ইটভাটায় কমছে কৃষিজমি শিল্প কারখানা-ইটভাটার নোংরা বর্জ্য মিশছে পানিতে। এতে পানি দূষিত হয়ে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ-ছবি-বাংলানিউজ

গাজীপুর: এক সময় গাজীপুরের প্রায় সব এলাকাতেই চাষাবাদ হতো। ছিল কৃষিজমি এবং চাষাবাদে মানুষের আগ্রহ। তবে এখন অপরিকল্পিতভাবে যেখানে-সেখানে গড়ে উঠেছে শিল্প কারখানা ও ইটভাটা। এতে দিন দিন কমে যাচ্ছে কৃষিজমির পরিমাণ। ফলে ভাটা পড়ছে কৃষিকাজে।

গাজীপুরবাসী জানান, ২০-২৫ বছর আগেও গাজীপুরের পাঁচ উপজেলার প্রায় সব এলাকাতেই বিপুল পরিমাণ কৃষিজমি ছিল। সব এলাকাতেই হতো চাষাবাদ।

গত কয়েক বছরে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে কৃষিজমিতে গড়ে উঠেছে শিল্প কারখানা ও ইটভাটা। ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে কৃষিজমি। এছাড়া ওইসব শিল্প কারখানা ও ইটভাটার কারণে গাজীপুরে মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। এসব মানুষের থাকার জন্য কৃষিজমি নষ্ট করে নির্মাণ করা হচ্ছে ঘরবাড়ি।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠা শিল্প-কারখানার দূষিত পানি ছড়িয়ে পড়ছে কৃষিজমি, নদ-নদী, খাল-বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে। এসব দূষিত পানির কারণে কৃষিজমিতে চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষিকাজ। কৃষিকাজে মানুষের আগ্রহও কমে যাচ্ছে। কৃষি জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে শিল্প কারখানা- ছবি-বাংলানিউজ

গাজীপুরের কড্ডা, কোনাবাড়ী, বাসন, ভাওয়াল মির্জাপুর ও কালিয়াকৈরসহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষিজমিতে গড়ে উঠেছে ইটভাটা। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে ফসল। ফসল না হওয়ায় অনেক কৃষিজমি পতিত রয়েছে। এছাড়াও ইটভাটার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। যার ফলে বিলীন হচ্ছে কৃষিজমি। কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনা ও অবহেলার কারণে কৃষিজমিতে এসব শিল্প কারখানা ও ইটভাটা গড়ে উঠছে। এভাবে চলতে থাকলে গাজীপুরে আগামীতে কৃষিজমির কোনো চিহ্ন থাকবে না।

গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫-২০০৬ সালে গাজীপুরে আবাদি জমি ছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৮০০ হেক্টর। ২০০৯-২০১০ সালে তা এসে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪০০ হেক্টরে। ২০১৬-২০১৭ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ১২ হাজার ৯৫৩ হেক্টরে। প্রতি বছরই কমছে কৃষিজমির পরিমাণ। কৃষিজমি দখল করে গড়ে উঠেছে ইটভাটা- ছবি-বাংলানিউজ

কড্ডা এলাকার বাসিন্দা শামসুল আলম জানান, কড্ডা এলাকাসহ গাজীপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে ১৫ থেকে ২০ বছর আগেও আবাদ হতো। ইটভাটা ও শিল্প-কারখানার কারণে এখন চাষাবাদ হয় না। কৃষিজমির উপর গড়ে তোলা হয়েছে ইটভাটা ও শিল্প কারখানা। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় ও শিল্প বর্জ্য কৃষিজমিতে নির্গত করায় জমি চাষের অনুপযোগী হয়ে গেছে।

গাজীপুর কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তেরের উপ-পরিচালক মো. মাহবুব আলম জানান, এভাবে দিন দিন কৃষিজমির পরিমাণ কমে গেলে এক সময় কৃষির জন্য একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। কৃষিজমি রক্ষায় আইনের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন বলে তিনি জানান।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৮
আরএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।