তবে তা বেশি দিন টেকেনি। একসময়ে দেখা গেল, এখানে বাস দাঁড়াতে-দাঁড়াতে এখন তা রীতিমতো বাস টার্মিনালে পরিণত হয়েছে।
এদিকে সড়কের এই অংশের ফুটপাতের পুরোটাই এবং মূল সড়কের কিছুটা অংশজুড়ে হকারদের আধিপত্য।
ফলে রাজধানীর ব্যস্ততম এই এলাকায় সারাক্ষণ যানজট লেগেই থাকছে। আর এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবী থেকে শুরু করে এই পথ দিয়ে চলাচলকারী সাধারণ যাত্রীদের।
গত ক’দিন গুলিস্তানের এই এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, অতিরিক্ত মানুষের চাপে যানজটে স্থবির হয়ে পড়ছে রাজধানীর ব্যস্ততম এ এলাকাটি। মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের প্রায় সবই পাওয়া যায় এখানে। আর এ কারণেই রাস্তা, ফুটপাত সবই ঢাকা পড়েছে দোকান, গ্যারেজ, আর পার্কিং করে রাখা যানবাহনে।
একই সঙ্গে সড়কের পশ্চিম পাশের লেনটিতে বিভিন্ন রুটের গণপরিবহনগুলো পার্কিং করে রাখা হয়েছে। সেখান থেকেই পর্যায়ক্রমে একটা করে বাস যাত্রীভর্তি করে ছাড়া হচ্ছে। এতে ছোটবড় সব পরিবহনের চাপ বাড়ছে মূল সড়কে। ফলে যানজটের মাত্রাও বেড়েছে কয়েক গুণ।
স্থানীয়দের দাবি, এখানে কয়েকটি বড় মার্কেট হওয়ায় মানুষের চাপও বেশি। এর উপর আবার রাস্তা দখল করে হকারদের অস্থায়ী দোকানের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। এতে মানুষ হাঁটলেও যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এখানকার ক্রীড়া সামগ্রীর ব্যবসায়ী ইলিয়াস মেহেদী বাংলানিউজকে বলেন, মানুষ বেশি থাকলে আমাদের ব্যবসা ভালো হয়। কিন্তু দিনকে দিন অবস্থা এমন রূপ নিচ্ছে যে, মানুষ এই এলাকায় পারতপক্ষে আসতেই চায় না। একবার এলে তার ঘণ্টার পর ঘণ্টা নষ্ট। ধীরে ধীরে পুরো রাস্তা দখল হয়ে যাচ্ছে, যেন দেখার কউ নেই।
সড়কের উপর বাস রাখার বিষয়ে স্থানীয় চাবিক্রেতা সদরুল বাংলানিউজকে বলেন, বাস মালিকরা পুলিশকে ‘ম্যানেজ’ করে নাকি ওই রাস্তা ব্যবহারের অনুমতি নিয়েছে। এজন্য ওই লেনে কোনো গাড়ি ঢুকতে দেয় না। তাদের কয়েকজন কর্মচারী আছে, তারা লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। কোনো, রিকশা, মোটর সাইকেল ওই লেনে ঢুকতেই পারে না।
বিষয়টি নিয়ে বাস মালিক পক্ষের লোকদের সঙ্গে কথা বললে তারাও একই উত্তর দেন। তাদের সাফ জবাব, তারা পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই সবকিছু করছেন।
বৈশাখী পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মধুবাবু বাংলানিউজকে বলেন, আমরা টার্মিনাল বানাইনি। এখানে বাসগুলো রাখা হয়, যাত্রী ফুল হলে ছেড়ে যায়।
‘এখানে তো বাস রাখা নিষেধ’ –তাকে একথা স্মরণ এমন প্রশ্ন করতে তিনি বলেন, আমরা ডিসি সাহেবের সঙ্গে কথা বলে অনুমতি নিয়েছি।
তবে অনুমতি দেওয়ার কথা অস্বীকার করলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক দক্ষিণ অংশের ডিসি রিফাত রহমান। একই সঙ্গে এই এলাকায় রাস্তার উপর বাস রাখার কথাও তিনি এই প্রতিবেদকের কাছেই প্রথম শুনছেন বলে জানান। তবে হকারদের বিষয়টি তার অধীনে নয় বলে দাবি করলেন তিনি।
রিফাত রহমান বলেন, অনুমতির বিষয়ে কেউ আমার কথা বলে থাকলে সে মিথ্যা বলেছে। ওটা তো একটা রাস্তা। সেখানে কোনো গাড়ি রাখা যাবে না। আর ওই লেন দিয়ে ধীরগতির গাড়ি যাবে যাতে যাত্রী ওঠানামা করা যায়। কিন্তু সেখানে দাঁড়ানো যাবে না। আমি এখনই ওই এলাকায় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলে দিচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৮
এসআইজে/জেএম