মুক্তিপণ আদায় শেষে ভিকটিমকে গভীর জঙ্গলে বা পরিত্যাক্ত ভবনে ফেলে পালিয়ে যেতো। চক্রটি কখনো কখনো সাধারণ যাত্রী সেজে বাসে উঠে অস্ত্রের মুখে বাস যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করে নিতো।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে এ চক্রের মূল হোতা শফিকুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) শফিকুলের প্রাথমিক স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে এ তথ্য জানান পিবিআই’র বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মো. আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর শাহ আলী থানায় আরিফ খান নামে এক ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলায় (নম্বর-৭) শফিকুলকে গ্রেফতার করা হয়। ওই ব্যবসায়ী শাহ আলীর রাইনখোলায় ‘রাহাত থাই অ্যালুমিনিয়াম অ্যান্ড গ্লাস হাউস’র মালিক। গত বছরের ৫ ডিসেম্বর দুপুরে বাবুল (২৮) নামে এক ব্যক্তি তার দোকানে এসে জানায়, গাজীপুরে তার একটি বাড়িতে থাই গ্লাস ও অ্যালুমিনিয়ামের কাজ করা প্রয়োজন।
এরপর পর ৮ ডিসেম্বর বাবুল তার দোকানে এসে থাই গ্লাস ও অ্যালুমিনিয়ামের দাম নির্ধারণ করে। বাবুল ছুটি পেলে দোকানের মালিক আরিফকে গ্রামের বাড়িতে বিল্ডিংয়ের কাজের মেজারমেন্ট করতে নিয়ে যাবে বলে জানায়।
১৯ ডিসেম্বর বাবুল দোকানে এসে আরিফ ও তার মিস্ত্রি সোহাগ খলিফাকে সঙ্গে করে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় চন্দ্রা এলাকায় নেমে কয়েকদফা গাড়ি পরিবর্তন করে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়। কোথায় যাওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে কয়েকজন মিলে আরিফ ও তার মিস্ত্রি সোহাগকে মারধর করে হাত-পা বেঁধে ফেলে।
অপহরণকারীরা তাদের সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। তারপর ভিকটিমদের আত্মীয়দের ফোন করে বিকাশের মাধ্যমে ৮৫ হাজার ৯শ টাকা আদায় করে পালিয়ে যায়। তারপর তারা নিজের চেষ্টায় রাতের আঁধারে হাত-পায়ের বাঁধন খুলে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর আরিফ খান বাদী হয়ে শাহ আলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পায় পিবিআই। তদন্তে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার রাতে অপহরণ চক্রের মূল হোতা শফিকুলকে গ্রেফতার করে। শফিকুল হবিগঞ্জের বানিয়াচং এলাকার বাসীন্দা। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান এসএস আবুল কালাম আজাদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৮
পিএম/জিপি