মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বিএসএফের আইজি (দক্ষিণবঙ্গ/পিআর) আরপি এস জয়সওয়াল বিষয়টি জানান।
তবে অভিযুক্ত বিএসএফ জওয়ানকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারতের পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা রবি মহাপাত্র।
অসমর্থিত সূত্রে জানা যায়, ভিরানা ভবিকে কোর্টে তুলে চারদিনের পুলিশি রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তবে যোগাযোগ করা হলেও এ বিষয়ে কেউই মুখ খুলছেন না।
সোমবার (২২জানুয়ারি) মৈত্রী এক্সপ্রেসের মধ্যে ৩৫ বছর বয়সী ওই বাংলাদেশি নারীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে বিএসএফ’র ওই জওয়ানের বিরুদ্ধে। কলকাতার চিৎপুর স্টেশন থেকে ভারতীয় সময় সকাল ৭টা ১০ মিনিট নাগাদ ট্রেনটি ছেড়ে আসার পর দমদম ও ব্যারাকপুরের মাঝামাঝি জায়গায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ট্রেনের ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে নিজের আসনের দিকে আসার পথে অভিযুক্ত জওয়ান ওই নারীর শরীরে অসৎ উদ্দেশ্যে স্পর্শ করছিলেন ও আপত্তিকর ব্যবহার করেন। এসময় দু’জনের মধ্যে ধস্তাধস্তির এক পর্যপায়ে ওই নারী পড়ে গিয়ে হাঁটুতে সামান্য আঘাত পান। পরে তিনি বিষয়টি জানান তার স্বামীকে।
তার স্বামী ট্রেনের মধ্যেই টিকিট চেকারকে বিষয়টি জানালে তিনি লিখিত অভিযোগ জানাতে বলেন। সেইমতো গেদে স্টেশনে (ভারতীয় সীমানার শেষ স্টেশন) নেমে স্টেশন মাস্টারের কাছে অভিযুক্ত জওয়ানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ নম্বর ধারায় (মোলেস্টশন) লিখিত অভিযোগ জানান ওই নারী।
অভিযোগের পরই গেদে থেকে দমদম রেল পুলিশকে ফোন মারফত বিস্তারিত জানানো হয়। রেল, বিএসএফ, জিআরপিসহ বিভিন্ন এজেন্সিগুলির মধ্যে খোঁজ চলে অভিযুক্ত জওয়ানের।
রবি মহাপাত্র জানান, কলকাতা স্টেশন থেকে ‘এন্ড টু এন্ড’ ইমিগ্রেশনসহ যাবতীয় পরীক্ষার পরই ট্রেনটি বিএসএফ’র আওতায় চলে যায়। যাত্রীরা ট্রেনের মধ্যে প্রবেশের পরই ট্রেনের দরজা বন্ধ করে দেয় এবং ভারতের অংশে শেষ স্টেশন গেদে গিয়ে ট্রেনের দরজা খোলা হয়। ওই চলন্ত ট্রেনের মধ্যেই বিএসএফ জওয়ানের বিরুদ্ধে এক বাংলাদেশি নারীকে শারীরিক লাঞ্ছনার অভিযোগ ওঠে।
মৈত্রী এক্সপ্রেসই হলো ভারতের মাটি থেকে ছাড়া প্রথম আন্তর্জাতিক ট্রেন, যেটি সরাসরি বাংলাদেশে গিয়ে পৌঁছায়। ২০০৮ সালের এপ্রিলে যাত্রা শুরুর পর থেকেই ট্রেনটি কলকাতা (চিৎপুর) স্টেশন থেকে ছেড়ে সোজা চলে যায় রাজধানী ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে। সেদিক দিয়ে মৈত্রী এক্সপ্রেসের একটা আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।
এ ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই এই রকম একটি ট্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। নিরাপত্তা নিয়ে যাত্রীরাও যথেষ্ট আতঙ্কিত। যদিও এটি বিক্ষিপ্ত ও দুঃখজনক ঘটনা এবং মৈত্রীর যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার বা বিপদের কোনো সম্ভাবনা নেই বলে যাত্রীদের আশ্বস্ত করেছেন ভারতের পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা রবি মহাপাত্র।
ঘটনাটির পর ভারতের পক্ষে যে যথেষ্ট অস্বস্তিকর সেকথা স্বীকার করেই রেলের এই কর্মকর্তা জানান, এতোদিন ধরে দু’দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও কোনোদিনই এরকম অভিযোগ আসেনি। এবারই প্রথম এরকম একটি অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটলো। বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। ভবিষ্যতে যাতে আর এ ধরনের ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করতে বিএসএফ’র সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৮
ভিএস/এএ