ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের নানা আবিষ্কার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৮
ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের নানা আবিষ্কার বিজ্ঞান মেলায় প্রদর্শনী/ছবি: বাদল

ঢাকা: বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের ক্যাম্পাসে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী বিজ্ঞান ও শিল্প প্রযু্ক্তি মেলা-২০১৮।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এ মেলার উদ্বোধন করেন। এরপর মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেলো ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের নানা আবিষ্কার।

বিভিন্ন বয়সী মানুষ স্টল ঘুরে দেখছেন। উদ্ভাবকরা আগতদের উদ্ভাবনের বিভিন্ন বিষয় বুঝিয়ে দিচ্ছেন।

ঢাকার ফার্মগেটের হলিক্রস উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির তিন শিক্ষার্থী নুসাইরা নুজহাত জেনিসা, তাসনিয়া সাইফুল রোজা ও মাইশা বিনতে কবির দ্বীপের বাসিন্দাদের বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেয়ার জন্য বায়ু শক্তির ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যন্ত্র বানিয়েছে। মেলার ২৮ নম্বর স্টলে তারা তাদের উদ্ভাবনী প্রদর্শন করেছে। দর্শনার্থীদের বুঝিয়ে দিচ্ছেন মাইশা।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনী (বিএএফ) শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্ষুদে বিজ্ঞানী ৭ম শ্রেণির ছাত্র আরাফাত নিলয় একই সঙ্গে দু’টি প্রজেক্ট দেখাচ্ছে দর্শনার্থীদের। তার স্টল নম্বর ৪২। আরাফাত বাংলানিউজকে বলেন, আমার উদ্ভাবনের নাম ‘ফ্রি এনার্জি প্রজেক্ট’। বাংলাদেশের অনেক গ্রামে এখনো বিদ্যুৎ পৌঁছেনি। আমার এ প্রজেক্টের মাধ্যমে গ্রামের গরীব মানুষদের বিনা খরচে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে চাই।  

এছাড়া খাঁটি দুধ চেনার খুব সহজ পদ্ধতি আবিস্কার করেছে আরাফাত। সে জানায়, খুব সহজেই জানতে পারবেন আপনার ক্রয়কৃত দুধ খাঁটি কি না। গ্লাসের মধ্যে যে পরিমাণ কোকাকোলা দিবেন তার চার ভাগের একভাগ দুধ দেবেন। তারপর দশ মিনিট রেখে দেবেন। দেখবেন গ্লাসের নীচে (দইয়ের মতো জমবে) তলানী জমতে থাকবে। যদি তলানীর পরিমাণ বেশি হয় তাহলে সেই দুধ খাঁটি।

বিজ্ঞান মেলায় প্রদর্শনী/ছবি: বাদলঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের ৯ম শ্রেণির তিন ক্ষুদে শিক্ষার্থী ময়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বানিয়ে প্রদর্শন করছে মেলায়। তারা বুঝিয়ে দিল কিভাবে ময়লাকে রিফাইন করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। মুনতাসির মুবিন, সামির চৌধুরী আর লেহান হায়দারের এ প্রজেক্টটির নাম ‘মডার্ন ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’।

তাদের প্রজেক্টে প্রথম ময়লা ফেলার একটি চেম্বার করা হয়েছে। সেখান থেকে কম্বাশন চেম্বারে গিয়ে ময়লা পুড়ে বটম অ্যাশ নিচে পড়বে। সেখানে ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটের মাধ্যমে মেটাল জাতীয় পদার্থ আলাদা করা হবে। আর ফ্লাই অ্যাশগুলো স্প্রে ড্রাইয়ারে যাবে। সেখানে আরো ড্রাই হবে। তারপর ফ্লাই অ্যাশ কার্বন থেকে আলাদা করে অন্যত্র নিয়ে কাজে লাগানো হবে। অন্য দিকে কার্বন ফিল্টার করে জলীয় বাষ্প বেড় করে দেবে। এই জলীয় বাষ্প একটি ড্রামে যাবে সেখানে কমপ্রেস হয়ে টার্বাইন ঘুরাবে। টার্বাইন ঘুরলে বিদ্যুৎ তৈরি হবে। জলীয় বাষ্প পুনরায় কুলারে গিয়ে ঠাণ্ডা হয়ে আবার কম্পাশন চেম্বারে যাবে বাষ্প হওয়ার জন্য। এভাবে একই জলীয় বাষ্প কয়েকবার ব্যবহার করা যাবে।

মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ৮ম শ্রেণির ক্ষুদে তিন বিজ্ঞানী বাইয়ান বিন আমিন, ঈসাত ইসলাম ও সাদিব দেওয়ান আফিক ৪ হাজার টাকায় বাজেট কম্পিউটার উদ্ভাবন করেছে। তাদের স্টল নম্বর ৮৫-খ।

দলনেতা বাইয়ান বিন আমিন বাংলানিউজকে জানান, অনেকে কম্পিউটার শিখতে বা চালাতে চায়। কিন্তু বাজেটের কারণে সবাই কিনতে পারে না। আবার কম্পিউটার শিখতে গেলেও ৩/৪ হাজার টাকা লেগে যায়। আমাদের উদ্ভাবনী কম্পিউটারটি মাত্র ৪ হাজার টাকায় কেনা যাবে।

এই কম্পিউটারের কনফিগারেশন বুঝিয়ে আমিন বলেন, অরেঞ্জ পাই যন্ত্রের মাধ্যমে তৈরি এই মিনি কম্পিউটারে ১ জিবি র‌্যাব, ১.৬ গিগা বাইট প্রসেসর, ৪ কে ভিডিও সাপোর্ট ও ৪ জিবি রম আছে। ইন্টারনেট ব্রাউজসহ এমএস অফিস ও পাওয়ার পয়েন্টসহ সব কাজই এটা দিয়ে করা সম্ভব।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৮
এমএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।