ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ডিবি পরিচয়ে ছিনতাই

সময়ের সঙ্গে পাল্টেছে ছিনতাইয়ের ধরন 

শেখ জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৮
সময়ের সঙ্গে পাল্টেছে ছিনতাইয়ের ধরন 

ঢাকা: আগে রাস্তার অলি-গলিতে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ছিনতাই করতো দুর্বৃত্তরা। সময় পাল্টে গেছে, সেই সঙ্গে পাল্টে গেছে ছিনতাইকারী চক্রের অপকর্মের ধরনও।

এখন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় ব্যবহার করে ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। লুটে নিচ্ছে মানুষের টাকা-পয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র।

বেশভুষা দেখে বোঝার উপায় নেই, তারা ছিনতাইকারী না কি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য।  

পুলিশ-ডিবি পুলিশ পরিচয়ে টার্গেটেড ব্যক্তিকে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে গাড়িতে তুলে নেয় ছিনতাই চক্রের সদস্যরা। পরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সব লুটে নিয়ে তাকে নির্জন স্থানে ফেলে পালিয়ে যায় তারা।  

প্রতিনিয়ত ছিনতাই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। তবুও থেমে নেই ছিনতাইয়ের ঘটনা। একের পর এক নতুন কৌশল অবলম্বন করে চালিয়ে যাচ্ছে অপকর্ম।   

পুলিশ বলছে, ছিনতাই রোধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। আগের মতো রাজধানীতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে না। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে পুলিশের অভিযানে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তবুও কিছু ছিনতাইকারী চক্র এখনও সক্রিয় আছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।  

গত ৬ ডিসেম্বর রাজধানীর উত্তরার ১ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কে ব্যাংক থেকে ৪০ লাখ টাকা তুলে ফেরার পথে টোকিও মুড কোম্পানির হিসাবরক্ষক সাঈদ মাহমুদ আল ফিরোজকে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ পরিচয়ধারী তিনজন তাদের গাড়ির গতিরোধ করে। গাড়ি তল্লাশির কথা বলে তাদের হাতে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। এরপর সাঈদ ও গাড়িচালক রবিকে সঙ্গে নিয়ে কিছু দূর যাওয়ার পর ৪০ লাখ টাকা লুটে নিয়ে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় তাদের নামিয়ে দেয়।  

এই ঘটনায় ১৭ জানুয়ারি রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে মো. জুয়েল রানা, মো. মাসুদ রানা ও আন্টু হাওলাদার নামে তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ডিবি জ্যাকেট, ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাফ ও নগদ ৬ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।  

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ভুয়া ডিবি পরিচয়ধারী মাসুদ গাজী, বাবু ফরাজী, আসাদ ও ফারুক আহমেদ নামে চারজনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। ছিনতাইকৃত ১৩ লাখ টাকাও তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।  

গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার ছিনতাই চক্রের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক ছিনতাইয়ের অভিযোগও রয়েছে। তারা ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে মানুষের সর্বস্ব লুটে নেয়। রাজধানীর পল্টনে অবস্থিত পলওয়েল মার্কেট থেকে ডিবি’র জ্যাকেচ, ওয়াকিটকি ও হ্যান্ডকাফ কিনেছিল।  

এ বিষষয়ে গোয়েন্দা ও অপরাধতথ্য বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন বাংলানিউজকে বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে। আগের তুলনায় ছিনতাইয়ের ঘটনা অনেক কমে গেছে। তবে কিছু গ্রুপ এখনও সক্রিয়।  

ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হলেও তারা জামিনে বের হয়ে যায়। বাইরে এসে তারা আবারও একই কাজে লিপ্ত হয়। মূলত এ কারণেই ছিনতাই পুরোপুরি রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।  

তিনি বলেন, প্রায় ৭০ ভাগ ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয় না। এ কারণেও ছিনতাই রোধ হচ্ছে না।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারী ২৬, ২০১৮
এসজেএ/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।