ফলে মহাখালীর ফ্লাইওভারের নিচের সৌন্দর্য কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। কংক্রিটের ঢালাইয়ের সাদা পিলারে সবুজ প্রলেপ আকৃষ্ট করছে পথচারীদের।
তাদেরই একজন পথচারী আমিনুল বারী। মোহাম্মদপুর আল্লাহ করিম মার্কেটের দোকানি তিনি। থাকেন মহাখালীর ব্যাটারি গলিতে।
তিনি বলেন, দেখতে বেশ ভালো লাগছে। সবুজ সবাইকেই মুগ্ধ করে। এর আগে ঢাকা শহরের পিলারে সবুজ ঘাসের কার্পেট কোথাও দেখিনি। তবে এটা কতদিন ব্যবস্থাপনা করা যায় সেটাই দেখার বিষয়। তবে থিমটা বেশ ভালো।
সরেজমিনে দেখা যায়, সবুজ ঘাসের মতো দেখতে হলেও এগুলো প্লাস্টিকের তৈরি। ১৯টি পিলারের মধ্যে বর্তমান পর্যন্ত ছয়টা পিলারে কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। পাশাপাশি দুই পিলারের মাঝখানের খালি অংশে লাগানো হয়েছে রকমারি বাহারি সব গাছ।
এগুলো কাটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিয়তই দেওয়া হচ্ছে পানি। মাস খানেক আগে শুরু হওয়া কাজের শেষ পর্যায়ে ফ্লাইওভারের পিলারে সবুজ ঘাসের কার্পেট দেওয়া হবে। সৌন্দর্য বর্ধণের এ কাজ করছে ইউনিকন মিডিয়া লিমিটেড।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) সূত্র জানায়, আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে এই সৌন্দর্য বর্ধণের কাজ করা হচ্ছে। ফ্লাইওভারের উপরেও সৌন্দর্য বর্ধণের কাজ করা হবে। ১২ মাস রকমারি ফুল শোভা পাবে ফ্লাইওভারের উপরে।
ঝুলন্ত টবের মাধ্যমে ফুল গাছ লাগানো হবে। ১২মাস রকমারি ফুল দেখে মুগ্ধ হবেন পথচারীসহ বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীরাও।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নতুন সৌন্দর্য বর্ধণের এ প্রকল্পে ডিএনসিসির কোনো টাকা খরচ হচ্ছে না। ইউনিকম মিডিয়া লিমিটেড সৌন্দর্য বর্ধণ কাজে বিনিয়োগ করছে। এর বিনিময়ে সেখানে বিজ্ঞাপন প্রচার করবে কোম্পানিটি।
ডিজিটাল স্ক্রিনের মাধ্যমে শুধু ফ্লাইওভারের পিলারে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে। প্রাথমিকভাবে ডিএনসিসি ও ইউনিকম মিডিয়া লিমিটেডের সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তি হয়েছে।
ফ্লাইওভারের পিলারে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় দিয়ে সৌন্দর্য বর্ধণ কাজের ব্যবস্থাপনা করা হবে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ে কাজ সন্তোষজনক হলে পরবর্তী পর্যায়ে চুক্তি নবায়ন করবে ডিএনসিসি।
বিষয়টি দেখভাল করছেন ডিএনসিসি-এর প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এম এ রাজ্জাক।
এ প্রসঙ্গে কমোডর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে মহাখালী ফ্লাইওভারে সৌন্দর্য বর্ধণ কাজ করা হচ্ছে। এর আওতায় ফ্লাইওভারের সব পিলার সবুজ কার্পেটে মোড়ানো হচ্ছে। তবে আমাদের কোনো টাকা খরচ হচ্ছে না বিনিময়ে যারা সৌন্দর্য বর্ধণ কাজ করছে তারা বিজ্ঞাপন প্রচার করবে।
বয়সে দেশের দ্বিতীয় মহাখালী ফ্লাইওভারে মোট স্প্যানের সংখ্যা ১৯টি। ২০০১ সালের ১৯ ডিসেম্বর কাজ শুরু হয়। যা জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় ২০০৪ সালের ৪ নভেম্বর।
ফ্লাইওভারের র্যাম্পের দৈর্ঘ্য ১৭৭ দশমিক ৭১ মিটার। এর মোট নির্মাণ ব্যয় ১১৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা। যার দৈর্ঘ্য ৬৬৭ দশমিক ৭৪ মিটার।
ইউনিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নুমায়ের এম মাহবুব বাংলানিউজকে বলেন, মহাখালী ফ্লাইওভারটির পুরোটাই আমরা সাজাবো। মানুষ বাসা বাড়ি যেভাবে সাজায় আমরাও সেভাবে এটি সাজাবো।
বিজ্ঞাপন প্রচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা শুধু ফ্লাইওভারের পিলার বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহার করবো। সবই হবে ডিজিটাল। বিজ্ঞাপন দেওয়ার ধরণটাও হবে আধুনিক। যেন সমস্ত ফ্লাইওভার হবে একটা সাজানো বাগান। শুধু ফ্লাইওভার নয় এর চারপাশও সাজানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৮
এমআইএস/এমএ