ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ব্রিজে গাড়ি চলে না, তাই ধান শুকাই

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৮
ব্রিজে গাড়ি চলে না, তাই ধান শুকাই ব্রিজে ধান শুকানো হচ্ছে। ছবি- বাংলানিউজ

কুষ্টিয়া: ভাঙা রাস্তা দিয়ে ব্রিজে কোনো গাড়ি উঠতে পারে না। এজন্য ব্রিজে গাড়ি চলে না। তাই আমরা ধান, পাট, ভুট্টাসহ যখন যে ফসল হয় সেগুলো শুকাই। অন্য সময় শুকাই কাপড়-চোপড়।

কথাগুলো বলছিলেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বুরাপাড়ার ও মিটন গ্রামের মধ্যকার ব্রিজে ধান শুকাতে আসা মহিরন নেছা।

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার সাগরখালী নদী।

বিভক্ত করেছে বুরাপাড়া ও মিটন গ্রামকে। এক পাশে পাকা রাস্তা, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজসহ অনান্য স্থাপনা। অন্য পাশে রয়েছে গ্রাম।  

এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করার দাবি ছিল স্থানীয়দের। দাবি পূরণও হয়েছে। কিন্তু দুই পাশে কোনো পাকা সড়ক নেই। যে কাঁচা সংযোগ সড়ক রয়েছে তা বর্তামানে যানবাহন চলাচলের উপযোগী নয়। ফলে ব্রিজটি মানুষের কোনো উপকারে আসছে না।  

১ কোটি ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ২৬৬ টাকা ব্যয়ে বুরাপাড়া-মিটন রাস্তায় সাগরখালী নদীর ওপরে ৭২.০৭৫ মিটার স্প্যান ব্রিজ নির্মাণ করে এলজিইডি।  

২০১৩ সালের ১৪ নভেম্বর স্থানীয়দের স্বপ্নপূরণ করে নতুন ব্রিজটি উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি। উদ্বোধনের ৬ মাস না যেতেই ব্রিজটিতে ওঠার দুই পাশের রাস্তা এমনভাবে ভেঙেছে যে ব্রিজটি কার্যত অকেজো হয়ে গেছে। কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না।  

স্থানীয় আব্দুল ওয়াদুদ বাংলানিউজকে জানান বলেন,  যখন ব্রিজ ছিলো না তখন মনে করতাম ব্রিজ হলে আমরা সুবিধা পাবো। কিন্তু ব্রিজ হলেও রাস্তার অভাবে আরো দুর্ভোগ পোহাচ্ছি আমরা। উদ্বোধনের পর ৬ মাসের সকো খুব ভালো চলছিল যাতায়াত। তারপর থেকেই দুই দিকের রাস্তা ভেঙে ব্রিজের ওঠার কোনো ব্যবস্থা নেই। কোনো মতে বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারলেও রিকশা, ভ্যান বা অন্য কোনো মোটর যান চলার কোনো উপায় নেই।  
 

একই এলাকার শহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, কোনো জরুরি রোগী নিয়ে যেতে হলে আমরা ব্রিজটি ব্যবহার করতে পারছি না। বলা যায়, ব্রিজটি আমাদের কাজেই আসছে না। ব্রিজ দিয়ে পায়ে হেঁটে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। স্থানীয় নেতাদের অনেক বলেছি, তারা শুধু আশা দিয়ে যায়, কাজ করে না।  

সরেজমিন দেখা যায়, ব্রিজে কোনো গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। কিছু মানুষ পায়ে হেঁটে চলাচল করছে। বর্তমানে ব্রিজটি স্থানীয়দেন ধান আর পোশাক শুকানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।  

ছবি- বাংলানিউজ

ব্রিজের ওপরে ধান শুকাতে দেখা গেলো স্থানীয় মহিরন নেছা ও মাছুরা খাতুনকে। মাছুরা বাংলানিউজকে বলেন, ব্রিজ তো হয়েছে অনেক আগে। তবে কোনো গাড়ি চলাচল করে না। এজন্য এখানে ধান শুকাই।
 

এ ব্যাপারে মিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ বাংলানিউজকে জানান, কাঁচা সংযোগ সড়কের পূর্বপ্রান্তের মাটি ধসে যাওয়ার কারণে ব্রিজে উঠতে সমস্যা হয়। আমি সরেজমিন গিয়ে সার্ভে করে এসেছি। দ্রুত বিষয়টি সমাধান করা হবে।  
 

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৮
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।