ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার-চাঁদাবাজি বন্ধে রাঙামাটিতে মহাসমাবেশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৮
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার-চাঁদাবাজি বন্ধে রাঙামাটিতে মহাসমাবেশ মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখছেন দীপংকর তালুকদার

রাঙামাটি: পার্বত্য চট্টগ্রামে খুন, গুম, চাঁদাবাজি বন্ধ এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে সচেতন নাগরিক কমিটির উদ্যোগে রাঙামাটিতে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় রাঙামাটি শহরের কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে সচেতন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক দীপংকর তালুকদার বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে একটি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলাদা রাষ্ট্র জুম্মল্যান্ড গড়ে তোলার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিচ্ছে। তারা আলাদা মুদ্রা, আলাদা পতাকা বানাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এখানে কিছু অসৎ অফিসার রয়েছে, যারা অবৈধ অস্ত্রধারীদের সহযোগিতা করছে। ’

দীপংকরে অভিযোগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) রাঙামাটি অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী আলাউদ্দীন রোববার সকালে ঠিকাদারদের ডেকে বলেছেন, একজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধির জন্য ৫ শতাংশ কমিশন দিতে হবে। কমিশন না দিলে কাজ বন্ধ থাকবে। এ ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

দীপংকর আরো জানান, রাঙামাটি অঞ্চলের প্রধান ব্যবসা কাঠ ও বাঁশ। আর এ ব্যবসা পরিচালনার জন্য চাঁদাবাজদের চাঁদার সঙ্গে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা জমা দিতে হয়। যেন শিয়ালের কাছে মুরগি আদি দেয়া।

তিনি জানান, কোনো সন্ত্রাসীকে আটক করলে সন্তু লারমা প্রশাসনকে ফোন দেয় ছেড়ে দেয়ার জন্য। এসময় সন্তু লারমার প্রতি আহ্বান জানিয়ে দীপংকর বলেন, আসুন অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে একটি আন্দোলনে সামিল হই। কারণ অস্ত্রধারীরা কারো আপন হতে পারে না।
 
এসময় প্রশাসনের উদ্দেশে দীপংকর বলেন, আপনারা অবিলম্বে এসব সন্ত্রাস, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন না হলে আমরা আরো কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে। প্রয়োজনে প্রতিটি উপজেলায় আলাদাভাবে সমাবেশ ও আন্দোলন করা হবে।

দীপংকর এসমসয় সমাবেশ সফল করার জন্য স্থানীয় প্রশাসন এবং সাধারণ জনগণকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

জাতীয় সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু বলেছেন, যেখানে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী চলবে সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। সন্ত্রাসীদের আর চাঁদা না দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এমপি বলেন, আমার, আপনার থেকে নেওয়া চাঁদার টাকায় সন্ত্রাসীরা অস্ত্র কিনে সাধারণ মানুষকে হত্যা, গুম করে এ পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করে তুলছে।

ওইদিন সকালে সচেতন নাগরিক কমিটির আহবায়ক দীপংকর তালুকদারের নেতৃত্বে রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন-রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি বেলায়েত হোসেন, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, বাস মালিক সমিতির সভাপতি মঈনুদ্দীন সেলিম, ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি সেকান্দর, কাপ্তাই উপজেলা সচেতন নাগরিক কমিটির আহবায়ক অংসুসাইন চৌধুরী, কাউখালী উপজেলা সচেতন নাগরিক কমিটির আহবায়ক অংসুপ্রু চৌধুরী, লংগদু উপজেলা সচেতন নাগরিক কমিটির আহবায়ক জানে আলমসহ স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ।

এদিকে সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষ নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং গাড়ি বন্ধ রেখে সমাবেশে যোগদান করেন। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই এ মহাসমাবেশ শেষ হয় দুপুরে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫১ ঘণ্টা, ২৮ জানুয়ারি, ২০১৮
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।