দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টটাচার্য্য বাংলানিউজকে জানান, দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটে গোপন সংবাদ আসে বনবিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তর এবং দখলদারদের মধ্যে ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে কক্সবাজারের ফাতেরঘোনায় ৫ একর পাহাড় ধ্বংস এবং ময়মনসিংহের ভালুকায় ১০ একর বনভূমি বেদখল হয়েছে।
অভিযোগ পাওয়ার পরপরই দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরীর নির্দেশে দুটি শক্তিশালী টিম গঠন করে মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) সাঁড়াশি অভিযান পরিচালিত হয় বলেও জানান প্রণব কুমার ভট্টটাচার্য্য।
কক্সবাজারের পাহাড় রক্ষা অভিযানের নেতৃত্ব দেন দুদকের উপপরিচালক লুৎফুল কবীর চন্দন। অভিযানে সহায়তা করে পুলিশ, র্যাব ও স্থানীয় প্রশাসনের একটি সমন্বিত টিম।
দুদকের অভিযানে জানা যায়, পাহাড়টি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট দখলে নেবার পর পর্যায়ক্রমে কয়েক দফা হাতবদল করে লাখ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে বিক্রি করা হয়েছে।
দুদক জানায়, এর মধ্যে ৫ একর পাহাড় সম্পূর্ণ কেটে ফেলে গড়ে তোলা হয়েছে বহু স্থাপনা। অভিযানে বেশকিছু স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে এবং পাহাড়ে লাল পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। অভিযান বুধবারও অব্যাহত থাকবে।
অন্যদিকে ময়মনসিংয়ের ভালুকায় বনবিভাগের ১০ একর জমি দখল করে বিশাল সীমানা প্রাচীর তৈরি করে দখল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন স্থানীয় মাফিয়া শহীদুল ইসলাম শহীদ ওরফে বাউন্ডারি শহীদ।
দুদক সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে দুদক টিম সোমবার পুরো এলাকা ঘুরে দেখে এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় অবৈধ দখল চিহ্নিত করে। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ময়মনসিংহ-এর নেতৃত্বে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের সমন্বয়ে ১০ ফুট লম্বা সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলা হয় এবং বনবিভাগের জমি দখলমুক্ত করা হয়। দীর্ঘদিনের এ দখলের ফলে বনবিভাগ কার্যত অসহায় হয়ে পড়েছিলো।
এ দুটি অভিযান সম্পর্কে এনফোর্সমেন্ট অভিযানের প্রধান মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, পাহাড় ধ্বংস এবং বনভূমি দখলের প্রধান কারণ দুর্নীতি। আর এ দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত পরিবেশ অধিদপ্তর এবং বনবিভাগ।
তিনি বলেন, এতে দুর্নীতিবাজরা শক্তিশালী হচ্ছে আর প্রতিষ্ঠান নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে। দুদক এ অচলায়তন ভাঙবে, পাহাড় এবং বনসম্পদ রক্ষার অভিযানের পাশাপাশি দুর্নীতির চক্র উৎপাটন করবে। দুই জেলার জেলা প্রশাসককে কঠোর নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯
আরএম/এমজেএফ