মঙ্গল ও বুধবার (২৯ ও ৩০ জানুয়ারি) কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন বিভাগ যৌথভাবে এ অভিযান চালায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদকের উপ-পরিচালক লুৎফুর কবির চন্দন।
জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেলিম শেখ বাংলানিউজকে জানান, পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ফাতের ঘোনায় সরকারি একটি পাহাড়ের প্রায় ৭৮ একর জমি অবৈধভাবে দখল করে ঘর তৈরি এবং খণ্ডখণ্ডভাবে বেচাকেনা করে আসছিল অসাধু চক্র। শহরের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি এই পাহাড়টির বিভিন্ন অংশে পাহাড়কাটাও শুরু করে তারা। এভাবে চক্রটি পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি, ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া, এমনকি পাকা ভবনও নির্মাণ করে। এর আগেও প্রশাসন সেই পাহাড়টিতে একাধিকবার অভিযান চালায়। এবার দু’দিনের অভিযানে শতাধিক ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করা হয়েছে। এরমধ্যে একতলা বিশিষ্ট ভবনও রয়েছে। পাহাড় কাটায় সন্দেহভাজন ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সিনিয়র কেমিস্ট কামরুল হাসান বলেন, ওই পাহাড়টির অন্তত ২০টি স্থানে পাহাড় কাটা হয়েছে। পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) এসএম হুমায়ুন কবির বলেন, উচ্ছেদের পর প্রাথমিকভাবে সেখানে চার শতাধিক বিভিন্ন গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পুরো পাহাড়জুড়ে বনায়ন করা হবে।
দুদকের উপ-পরিচালক লুৎফুর কবির চন্দন বলেন, দীর্ঘদিন অবৈধ দখলে থাকা পাহাড়টি মুক্ত করা হয়েছে। এটি যেন পুনরায় বেদখলে না যেতে পারে সেজন্য প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো হবে। কক্সবাজারের যেসব স্থানে সরকারি পাহাড় দখল করে ঘরবাড়ি তৈরি করা হয়েছে, সেসব বাড়ি-ঘর উচ্ছেদ করার পাশাপাশি অবৈধ দখলে যাওয়া পাহাড় উদ্ধার করতে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি জড়িতদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে উচ্ছেদ হওয়া ঘরগুলোর বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, ফাতের ঘোনা পাহাড় থেকে উচ্ছেদ হওয়া বেশিরভাগই দরিদ্র এবং ভূমিহীন। বিনা নোটিশে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানোয় অনেক ভূমিহীন পরিবার তাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সেজন্য উচ্ছেদকৃতদের পুনর্বাসনের দাবিও জানান তারা।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৯
এসবি/এইচএ/