সরকারি মামলা পরিচালনার জন্য বর্তমানে শতভাগ প্রসিকিউটর রাজনৈতিকভাবে নিয়োগ করা হয়। বিষয়টি স্বাধীন প্রসিকিউশনের সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নরের ২৫ সেপ্টেম্বরকে ‘বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ডে’র ঘোষণাপত্র হস্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী একথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রসিকিউশন সার্ভিস করার কথা চিন্তা করছি এবং খুব সিরিয়াসলি চিন্তা করছি। বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে যেন রিক্রুটমেন্টটা হয় সেই ব্যবস্থা করছি।
আইনমন্ত্রী বলেন, সবটা প্রসিকিউশন সার্ভিস ইন্ডিপেনডেন্ট প্রসিকিউশন সার্ভিস হিসেবে করাটা প্র্যাকটিক্যাল হবে না। সেজন্য অন্ততপক্ষে ৩০ শতাংশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রসিকিউশন সার্ভিস এবং ৭০ শতাংশ পলিটিক্যাল অ্যাপয়েন্টমেন্ট- আমরা এভাবে শুরু করতে চাই। তার সাকসেসের উপর নির্ভর করবে ইন্ডিপেনডেন্ট প্রসিকিউশন সার্ভিসের পারসেন্টেজ আরও বাড়ানো হবে কিনা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন যেভাবে বিজ্ঞ বিচারক নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নেন, ঠিক সেভাবেই প্রসিকিউটর নিয়োগের জন্য একটি পরীক্ষা নেওয়ার প্রথা চালু করব।
কবে নাগাদ এটা শুরু করা হবে- প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা একটা প্রসেসের মধ্যে আছি। আমি এই মুহূর্তে কোনো সময় বেধে দিতে পারবো না। গত টার্মে আমরা নানাবিধ অসুবিধার জন্য আমরা এটা কার্যকর করতে পারিনি।
পাবলিক প্রসিকিউটরদের বেতন বাড়ানোর উদ্যোগ বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, একজন পাবলিক প্রসিকিউটর যার উপর একটা জেলার উল্লেখযোগ্য ও স্পর্শকাতর মামলাগুলো ন্যস্ত করা হয়, যার দায়িত্বে থাকে তাকে প্রতিদিন ৫শ টাকা দেওয়া হয়। সেটা তুলতে কিন্তু আমার ৩শ টাকা খরচ হয়ে যায়। আর পারিশ্রমিক বোধহয় তিন হাজার টাকা মাসে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা এই পদগুলোতে অত্যন্ত পরীক্ষিত ও ভালো আইনজীবী পাই সেজন্য এটাকে একটা স্যালারি স্ট্রাকচারের মধ্যে আনার চেষ্টা করছি। আমাদের প্রোগ্রামটা প্রোপোজাল হিসেবে গেছে। আগামী বছরের ১ জুলাই থেকে যাতে এই স্যালারি স্ট্রাকচার কার্যকর করতে পারি সেজন্য যে বাজেট প্রয়োজন, আমাদের হিসাবে বছরে ২৬৭ কোটি টাকা লাগবে।
দ্বিতীয় টার্মে আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া আনিসুল বলেন, আমি প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী মুহিত সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তিনি নীতিগতভাবে রাজি হয়েছিলেন। পরে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছি। প্রধানমন্ত্রী শুরুতে আমাকে বলেছিলেন এটা করা অত্যন্ত প্রয়োজন, সেজন্য আমি এটা শুরু করেছিলাম। বর্তমান অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আমি কথা বলেছি। ইনশাআল্লাহ আমরা চেষ্টায় আছি, জুলাই মাস থেকে এটা শুরু করার। আর বাজেটে এই বরাদ্দ যাতে থাকে সেই ব্যবস্থা করার চেষ্টায় আছি।
তুরিন আফরোজের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলার এক আসামির সঙ্গে বৈঠকের অভিযোগের তদন্তের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, দেখেন আমি একটা কথা বলি, এই ব্যাপারটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখন যে কোনো কমেন্ট যদি আমি করি তাহলে যেটা হবে, যেই জিনিসটা দেখা হচ্ছে এর উপর একটা প্রভাব পড়বে। যতক্ষণ পর্যন্ত না জিনিসটা স্পষ্টভাবে আমার কাছে না পৌঁছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি কমেন্ট করবো না।
তদন্ত কতদিন লাগতে পারে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমি কারো উপরে চাপিয়ে দিতে চাই না এই সময়ের মধ্যে। একটা জিনিস আপনারা দেখবেন তুরিন আফরোজের এই কারণের প্রসিকিউশন বা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাজ বন্ধ নেই। শুধু শুধু অন্য ট্র্যাকে যাওয়ার এখন কিন্তু প্রয়োজন নেই। তার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খতিয়ে দেখার পর আমি কথা দিতে পারি যে, আই উইল কাম আপ উইথ দ্য রিপোর্ট।
***জামায়াত যে রূপেই আসুক অপরাধীদের জবাবদিহি করতে হবে
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৯
এমআইএইচ/এএ