মঙ্গলবার (০৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় লালমনিরহাটের আদিতমারী থানায় মামলাটি দায়ের করেন তার স্ত্রী আরজু বেগম।
এর আগে বুধবার (৩০ অক্টোবর) পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় আল আমিনকে আটক করে সদর থানা পুলিশ।
পুলিশ কনস্টেবল আল আমিন লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামের হানিফ ইসলামের ছেলে। তিনি রংপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাব জজ ড. আব্দুল মজিদের দেহরক্ষী।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, পুলিশ কনস্টেবল আল আমিন (ক নং ১৪১২) ২০১২ সালে আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবদা গ্রামের আমিনুল ইসলামের মেয়ে আরজু বেগমকে বিয়ে করেন। আল আমিন ৩ লাখ টাকা যৌতুক নিয়ে দুই লাখ ৯০ হাজার টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। স্ত্রী-সন্তান রেখে লালমনিরহাট শহরের বসুন্ধরা এলাকায় এক বিজিবি সদস্যের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলে আল আমিন। তার প্রেমে বিজিবি সদস্য স্বামীকে তালাক প্রদান করেন আল আমিনের প্রেমিকা। এরপর পরকীয়া প্রেমিকাকে বিয়ে করতেও টালবাহনা করেন তিনি।
গত ২৯ অক্টোবর ছুটিতে বাড়ি এসে পরকীয়া প্রেমিকার বাড়িতে যান আল আমিন। ওই দিন রাতে স্থানীয়রা পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় তাকে আটক করে লালমনিরহাট সদর থানায় সোপর্দ করে। পরদিন পরকীয়া প্রেমিকার দায়ের করা মামলায় (নং ৬২) তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সদর থানা পুলিশ জেল হাজতে পাঠায়। গত ২১ নভেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়ে বাবার বাড়িতে থাকা স্ত্রী আরজুকে পাশের একটি মাদরাসায় কৌশলে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে গলায় ছুরি ধরে জোরপূর্বক সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। এসময় আল আমিন ও তার সহযোগীদের আঘাতে কানে মারাত্মক আঘাত পান আরজু বেগম। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় স্ত্রী আরজু বেগম স্বামী আল আমিনসহ চার জনের বিরুদ্ধে গত ২৮ নভেম্বর আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ মঙ্গলবার (০৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে।
মামলার বাদী আরজু বেগম বাংলানিউজকে বলেন, মীমাংসার কথা বলে ডেকে নিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর চায় আল আমিন। না দিলে লাঠি দিয়ে মারপিট করে গলায় ছুরি ধরে স্বাক্ষর নেয়। এখন থানায় অভিযোগ দেওয়ায় পুরো পরিবারকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে আল আমিন। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাই মামলা নিতেও বিলম্ব করে থানা। এখন পুরো পরিবার আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তারা।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, মামলা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে গ্রেপ্তার করার মত হলে অবশ্যই আল আমিনকে গ্রেফতার করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৯
এসএইচ