জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরকে পাকস্তানি বাহিনী মুক্ত করতে মুক্তিযোদ্ধারা নয় মাস জেলার বিভিন্নস্থানে পাকস্তানি বাহিনীর সঙ্গে ১৯টি সম্মুখ যুদ্ধসহ ২৯টি দুঃসাহসিক অভিযান চালায়। এতে শহীদ হন ১১৪ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েক হাজার মুক্তিকামী বাঙালি।
মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস ধরে পাকস্তানি বাহিনী ও তার দোসররা লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন স্থানে নারকীয় তাণ্ডব চালায়। পাকস্তানি হানাদার বাহিনী শহরের বাগবাড়িতে ক্যাম্প স্থাপন করে বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিকামী হাজার হাজার নর-নারীকে ধরে এনে টর্চার সেলে নির্যাতন চালাত এবং তরুণীদের পাশবিক নির্যাতন শেষে হত্যা করে বাগবাড়িস্থ গণকবর, মাদাম ব্রেজ এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গর্তে পুঁতে ফেলতো এবং অনেককেই ফেলে দিত খরস্রোত রহমতখালী নদীতে।
নারকীয় এসব হত্যাযজ্ঞের নিরব সাক্ষী হয়ে আছে শহরের বাগবাড়ী গণকবর, মাদাম ব্রিজ, পিয়ারাপুর ব্রিজ ও মজুপুরের কয়েকটি হিন্দু ও মুসলমান বাড়ি।
কয়েকজন প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা জানান, ৭১ সালের ২১ মে ভোরে লক্ষ্মীপুর শহরের উত্তর ও দক্ষিণ মজুপুর গ্রামের হিন্দু পাড়ায় ভয়াবহ তাণ্ডব চালায় পাকস্তানি বাহিনী। বাড়ি ঘরে আগুন লাগিয়ে, বহু মানুষকে গুলি ও বেওনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে পাকস্তানি হানাদার বাহিনী ও তার দোসররা। এতে শহীদ হন প্রায় ৪০ জন নিরস্ত্র মুক্তিকামী বাঙালি।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল সূত্র জানায়, ৭১’র ১ ডিসেম্বর থেকে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল হায়দার চৌধুরী এবং সুবেদার আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা সাঁড়াশি আক্রমণ চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন ক্যাম্পে। অবশেষে, ৪ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও এর দোসররা।
বাংলাদেশ সময়: ০২৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯
এসআর/এসআরএস