শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গরম কাপড়ের চাহিদা ও দাম। চাদর, সোয়েটার, মাপলার, ব্লেজার, উলের পোশাক, ট্রাউজার, কানটুপি, জ্যাকেটসহ নানা ধরনের শীতবস্ত্রের দাম খুলনায় এবার তুলনামূলক বেশি।
সরেজমিন মহানগরীর নিক্সন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, অপেক্ষাকৃত কম দামে বিভিন্ন ধরনের শীত পোশাক পাওয়ার আশায় নিম্ন আর মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজনের ভিড় এ মার্কেটে বেশি। কিন্তু সেখানেও এবার পোশাকের দাম চড়া। গত বছর গরম কাপড়ের যে দাম ছিল এবার তা প্রায় দ্বিগুণ। বর্তমানে ২০০ থেকে শুরু করে ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত দামের সোয়াটার ও উলের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। দেশি ব্লেজার মিলছে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা। চাইনিজ ব্লেজার ১ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকায়। লেদারের জ্যাকেট পাওয়া যাচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকায়। শাল ৩০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত দরে পাওয়া যাচ্ছে। কাশ্মীরি শাল পাওয়া যাচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ৫ হাজার টাকায়। ফুলহাতা গেঞ্জি পাওয়া যাচ্ছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকায়।
অনুরূপভাবে খুলনা শপিং কমপ্লেক্স, নিউ মার্কেট, রেলওয়ে মার্কেট, শিব বাড়ির মোড়ের বিভিন্ন অভিজাত ফ্যাশান হাউজেও এবার শীত পোশাকের দাম হাকা হচ্ছে আকাশ চুম্বী। শীতের কাপড়ের পাশাপাশি কম্বলের চাহিদা বেড়েছে। শীত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অন্যতম উপকরণ হল কম্বল। তবে শীত পোশাকের চেয়ে কম্বলের দাম তুলনামূলক কম।
মার্কেটে উঠেছে সোয়েটার, জ্যাকেট, হাফ হাতা সোয়েটার, কড ও গ্যাবার্ডিনের কাপড়ের চীনা ও দেশি ব্লেজার, হুডি, কাশ্মীরি শাল, ফুলহাতা গেঞ্জিসহ বৈচিত্র্যময় গরম কাপড়।
আব্দুর জব্বার বিপণী বিতানের মেসার্স কমল অল্টার পয়েন্টের মালিক কমল সাহা বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে বাংলানিউজকে জানান, গত কয়েকদিন ধরে শীতের পোশাক ভালো বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী নানা ধরনের শীতে পোশাক এনেছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারাও ভিড় করছেন তাদের পছন্দের পোশাক কিনতে। তাই বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে।
দামের বিষয় জানতে চাইলে কয়েকজন দোকানি বলেন, শীতের সময়ই কেবল শীত পোশাকের বিক্রি হয়, তাই ব্যবসায়ীরা একটু লাভে বিক্রি করছেন।
একই বিপণী বিতানের তাসনিম ফ্যাশানের মালিক মো. মহিউদ্দিন বলেন, শীত বাড়ায় ভালো বেচা-বিক্রি শুরু হয়েছে। দিন যত যাবে বিক্রিও বাড়বে। আমাদের এখানে দাম বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই। সবই একদাম।
এ বছর সিটি করপোরেশন ও পুলিশের কড়াকড়িতে মহানগরীর বেশিরভাগ এলাকায় ফুটপাতে ও রাস্তার পাশে ভ্যানগাড়িতে খুব একটা বিক্রি হচ্ছে না শীতের পোশাক। এছাড়া ফেরিঘাট মোড়ে পুরাতন কাপড়ের দোকানে সম্প্রতি আগুণ লেগে সব দোকান পুড়ে যাওয়ায় শীত পোশাকের দাম বেড়েছে বলে অভিযোগ অনেকের।
ব্র্যান্ডের দোকান বা শপিং মলে গলাকাটা দামের ভয়ে যেতে চান না মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্তের অনেকেই। তাদের পছন্দ ছিলো ফুটপাতের দোকানগুলো। কিন্তু এবার প্রতি বছরের ন্যায় শত শত দোকান ফুটপাতে না বসায় নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে।
গৃহিনী শরীফা রহমান বলেন, গত বছর শিশুদের যে পোশাকের দাম ৫০০ টাকা ছিলো। তা এবার ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফাহাদ বলেন, এবার পোশাকের গলাকাটা দাম। ডিজাইনের প্রাচুর্যের সঙ্গে দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। পছন্দ হলেও দমে যেতে হচ্ছে দাম শুনে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯
এমআরএম/ওএইচ/