ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

১৭ বছর বয়সে ৫৯ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৯
১৭ বছর বয়সে ৫৯ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার সংবাদ সম্মেলন, ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: ৫৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ নারী জানিয়েছে তাদের ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সের মধ্যেই যৌন হয়রানির অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছে। পাবলিক প্লেসে ৯৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ নারী ও কন্যাশিশু একাধিকবার যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম আয়োজিত ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সমন্বিত আইন এখন সময়ের দাবি’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ গবেষণার তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনটির সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাছিমা আক্তার জলি বলেন, বর্তমানে নারী ও শিশুদের  ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

যার ধরন ও মাত্রা প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। শুধু কন্যাশিশুরাই নয়, ছেলে শিশু ও প্রতিবন্ধী নারীসহ সব বয়সী নারীর প্রতিও ঘটছে ধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যা এবং নানাবিধ যৌন হয়রানি। নির্যাতনকারীদের বিকৃত মানসিকতা থেকে শিশু-বৃদ্ধা-তরুণী কেউই নিরাপদ নয়।

নাছিমা আক্তার জলি বলেন, সাম্প্রতি আমরা একটি জরিপ পরিচালনা করেছি। সেখানে ১২ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৩৯২ জন নারী অংশগ্রহণ করেন। জরিপের তথ্যমতে, পাবলিক প্লেসে ৯৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ নারী ও কন্যাশিশু এক থেকে একাধিকবার যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। ৫৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ নারী ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সের মধ্যেই জীবনে প্রথমবারের মত যৌন হয়রানির অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন। ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ নারী ছয় বছর বয়সের আগেই এবং ১৫ দশমিক ২৬ শতাংশ নারী ১০ বছরের আগেই জীবনে প্রথম যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন। এদের মধ্যে ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ নারী নিকটাত্মীয় মাধ্যমে, ২৬ দশমিক ১৭ শতাংশ পরিচিত ব্যক্তি এবং ৬৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ নারী অপরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।

২০০৯ সালের হাইকোর্টের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে নির্দেশনা যথেষ্ট নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি যৌন হয়রানি প্রতিরোধে একটি সমন্বিত আইন প্রণয়ন করা এখন সময়ের দাবি। ২০০৯ সালে হাইকোর্টের নির্দেশনামূলক নীতিমালায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং কর্মস্থলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু যৌন হয়রানি কেবলমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মস্থলেই ঘটছে না। এর পরিধি ব্যাপক ও বিস্তৃত। পথে-ঘাটে, যানবাহনে-জনপরিসরে, এমনকি গৃহের অভ্যন্তরেও যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে।

সংগঠনটির সভাপতি বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গবেষণায় ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। আর সেটি হচ্ছে ৯৮ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার হয়। আমাদের সমাজে নারী-পুরুষের সমান অধিকার। যদি আমরা নারীদের দুর্বল মনে করি তবে সমাজ পরিবর্তন হবে না। তাদের সহযোগিতা করলে সমাজ হবে আরও শক্তিশালী। আমাদের গবেষণায় উঠে এসেছে যৌন হয়রানির জন্য নারীর পোশাক দায়ী নয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নারী সাংবাদিক কেন্দ্রর সভাপতি নাসিমুন আরা হক, অপরাজেয় বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানু, গার্লস অ্যাডভোকেসি এলাইন্সের টিম লিডার ফারজানা মেহরীন, কলামিস্ট মো. আহাদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯
এমএমআই/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।