বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন (আরএস) ডা. আরিফুল ইসলাম নবীন বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, দগ্ধদের মধ্যে আটজনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফসাপোর্টে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন ঘটনাস্থলে ও বাকি ১২ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এছাড়া একজনকে স্বেচ্ছায় তার স্বজনরা বাড়ি নিয়ে গেছেন।
জাতীয় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, সকালে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন থেকে ১০ জনকে আমাদের এখানে আইসিইউর লাইফসাপোর্টে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে মেহেদী ও ওমর ফারুক নামে দুইজন মারা যায়। বাকি আটজন এখনও লাইফসাপোর্টে আছেন। তাদের বাঁচার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
এর আগে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকার ‘প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’র কারখানায় আগুন লাগে। ঘটনার সময় শ্রমিকরা কাজ করছিলেন। তখন হঠাৎই গ্যাস রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।
ইঞ্জিনিয়ার এসে শ্রমিকদের আগুন লাগার খবর দেয়। এরপর শ্রমিকরা পানি ও কারখানায় থাকা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলে তখনই তারা দগ্ধ হয়।
এ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১০ হাজার স্কয়ার ফিট কারখানাটির ভেতরের সব মালামাল ও যন্ত্রাংশ পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডের ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জাকির হোসেন (২২) নামে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় প্রায় ৩৫ জনকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে দগ্ধদের মধ্যে থেকে রাত থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ১৩ জনের মৃত্যু হয়।
‘প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’র কারখানার গত দুই বছরে তিনবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যার দুটোই ঘটেছে চলতি বছরে। প্রতিটি অগ্নিকাণ্ড ছিল ভয়াবহ।
২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর কারখানাটিতে প্রথম অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এরপর চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো আগুন লাগে। তবে ওই দু’টি অগ্নিকাণ্ডে কারখানার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
সর্বশেষ বুধবার তৃতীয়বারের মতো আগুন লাগে কারখানাটিতে।
আরও পড়ুন>
** অগ্নিকাণ্ড: ঢামেক হাসপাতালে স্বজনহারাদের আহাজারি
** কেরানীগঞ্জে অগ্নিকাণ্ড: নিহত বেড়ে ১৩
** কেরানীগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০
** কেরানীগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯
** কেরানীগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আরও ৩ জনের মৃত্যু
** একই কারখানায় ২ বছরে তিন বার আগুন
** আগুনের সূত্রপাত ‘গ্যাস রুমে’, নেভাতে গিয়েই দগ্ধ শ্রমিকরা
***কেরানীগঞ্জে আগুন: কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে ক্ষতি বেশি
***কেরানীগঞ্জে প্লাস্টিক কারখানার আগুনে নিহত ১, দগ্ধ ৩২
***কেরানীগঞ্জে অগ্নিকাণ্ড: অনুমোদন ছিল না ওই কারখানার
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৯
এজেডএস/ওএইচ/