ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঈশ্বর থাকেন ওই ভদ্রপল্লিতে...

শেখ তানজির আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯
ঈশ্বর থাকেন ওই ভদ্রপল্লিতে...

সাতক্ষীরা: ব্যারাকের টিনের চাল ও দেয়ালে অজস্র ছিদ্র। কোথাও কোথাও চাল ও টিনের দেয়ালের অস্তিত্বও নেই। অবাধে ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় শীত মৌসুমে ঘরে থাকা যেমন দায়, তেমনি বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি পড়ে একাকার হয়ে যায় সবকিছু। আর গ্রীষ্ম মৌসুমেও কাঠফাটা রোদে থাকা যায় না ব্যাকারের ঘরে। এমনই দুঃসহ অবস্থায় ৬০টি পরিবারের মধ্যে ইতোমধ্যে ২৫টি ব্যারাক ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে।

প্রখ্যাত উপন্যাসিক মানিক বন্দোপ্যাধায়ের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলতে হয়, ‘ঈশ্বর থাকেন ওই ভদ্রপল্লিতে, তিনি নীলকণ্ঠপুর আশ্রয়ন প্রকল্প দেখেন না’।

তাই যদি না হয়, তবে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের গলঘেষিয়া নদীর তীরে অবস্থিত নীলকণ্ঠপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের এমন দুরাবস্থা হওয়ার কথা নয়।

পায়খানা-প্রসাবের জায়গাও নেই এই আশ্রয়ন প্রকল্পে। যা ছিল তা দেখলে মনে হয় শত বছরের পুরোনো কোনো ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থাপনা। আর খাবার পানির সংকট পৌঁছেছে চরমে। আগে ব্যারাকের পুকুরের পানি খাওয়া গেলেও এখন লবণাক্ততায় তা আর খাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে ব্যারাকের বাসিন্দাদের ৭ কিলোমিটার দূর থেকে খাওয়ার ও রান্নার পানি কিনে আনতে হয়।

...স্থানীয় বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর খলিলুর সরদার জানান, এক যুগ আগে নীলকণ্ঠপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের ব্যারাকগুলো তৈরি। এ প্রকল্পের তিনটি ব্যারাকে ৬০টি পরিবার বসবাস করতে পারতো। কিন্তু ঘরগুলোর টিনের চাল ও দেয়ালে অজস্র ছিদ্র হয়েছে। ভেঙে ভেঙে পড়ছে। মানুষ তো দূরের কথা, সেখানে গরু-ছাগল রাখাও বিপদজনক। তাই ২৫টি পরিবার ইতোমধ্যে ব্যারাক ছেড়ে চলে গেছে।

ব্যারাকের বাসিন্দা আবু মুছা গাজী জানান, খাবার পানি নেই, পায়খানা-প্রসাবের জায়গা থাকতেও নেই। রোদ, বৃষ্টি, ঠাণ্ডা কোনো সময়ই থাকা যায় না ঘরে। চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে অত্যন্ত কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তারা। তিনি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

...এ বিষয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাঈদ মেহেদী বাংলানিউজকে বলেন, আমি সরেজমিনে নীলকণ্ঠপুর আশ্রয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করেছি। আসলে ওখানে থাকার পরিবেশ নেই। আবার যে অবস্থার তৈরি হয়েছে, তা সংস্কার করার পর্যায়েও নেই। আমরা ওখানে নতুন করে আধুনিক আশ্রয়ন প্রকল্প গড়ে তোলার প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।