ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

'দিবস আইছে, তাই ফুলের কদর বাড়ছে'

সাগর ফরাজী, সাভার করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২০
'দিবস আইছে, তাই ফুলের কদর বাড়ছে' 'দিবস আইছে, তাই ফুলের কদর বাড়ছে'। ছবি: বাংলানিউজ

সাভার (ঢাকা): 'গত বছরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের ফুলের বাজার খুব খারাপ অবস্থায় গেছে। কাস্টোমার (ক্রেতা) নাই, ফুল গাছে ধরে গাছেই পঁচে গেছে।

ওয়াডার পাইনি তাই ফুলও তুলতে পারিনি'

'১৪ই ডিসেম্বর ও ১৬ই ডিসেম্বর দুই দিবসের কারণে গত ৫ তারিখ থেকে ফুলের ভালো ওয়াডার পাইতেছি। দুই দিন আগে আমাদের বিরুলিয়ার ফুল ঢাকায় বেশি গেছে, এখন আবার নবীনগর, সাভার ও আশুলিয়া বাজারের দিকে বেশি যাইতেছে। ' 

'আসলে দিবস আইছে তাই এখন ফুলের কদর বাড়ছে। আগে তো কোনো ফুলের কোনো দরকার ছিলোনা' 

কথাগুলো আক্ষেপের সাথে রাগান্বিত হয়ে বলছিলেন বিরুলিয়ার শ্যামপুর এলাকার ফুল চাষী ও ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম। ১৫ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুরে গোলাপ গ্রামে গিয়ে কথা হয় তার সাথে।

সাইফুল বাংলানিউজকে জানান, তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে গোলাপ ফুলের চাষ করে আসছেন। প্রায় ২০ বছর যাবৎ তিনি ফুলের বাগান তৈরি সহ ফুল বিক্রি করে আসছেন। করোনার কারণে চরম বিপদে পরেছেন। শ্রমিকদের বেতন দিতে গিয়ে ঋণ করতে হয়েছে। পরে বাধ্য হয়ে ফুল চাষ বাদ দিয়ে দুই বিঘা জমিতে সবজি চাষ শুরু করেন।

তিনি বলেন, এই ডিসেম্বরই এই বছরের সর্বোচ্চ ইনকাম। করোনার কারণে আর কয়েক দিন লকডাউন থাকলেই আমাদের পথে বসতে হতো। আগামী দিবসগুলোতে ভালো ভাবে ফুল বিক্রি করতে পরলে সব আবার আগের মত ঠিক ঠাক হবে।  

বছর জুড়েই ফুলচাষীদের জীর্ণ দশা যেন কাটলই না। এই যে দিবস, অনুষ্ঠান যাচ্ছে কিন্তু ফুলের কোনো চাহিদায় থাকছে না সেখানে। এখন বছরের শেষ দিকে এসে ফুল বিক্রি হচ্ছে।

একই দিন বিকালে নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধের সামনের দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, দম ফেলার ফুরসত নেই ফুল ব্যবসায়ীদের। বিরুলিয়া থেকে ফুল কিনে এনে, দোকানে বসে বসে শ্রমিকদের দিয়ে পুষ্পস্তবক তৈরি করা হচ্ছে। কোনো কোনো শ্রমিক আবার গোলাপ এক সাথে ১০-১৫ টি করে সাথে অন্য ফুল দিয়ে স্টিক তৈরি করছেন। প্রতিটি পুষ্পস্তবক এক হাজার টাকা করে বিক্রি করছেন আরিফ।  

আরিফ পুষ্প বিতানের মালিক আরিফের সাথে কথা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের দুই দিন আগে থেকে বলে রাখলে আমরা পুষ্পস্তবক তৈরি করে রাখি। স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতা আমাদের এখানে বানাতে দিয়েছে। এ বছরে যা ইনকাম করিনি তা এই দুই দিনে করছি। কারণ করোনায় কারণে ফুল ব্যবসা একদমই হয়নি।  

বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২০
কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।