সিলেট: যুক্তরাজ্য থেকে আসা যাত্রীদের জন্য ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে চলেছে মাঠ প্রশাসন।
প্রবাসীদের দাবি, মাতৃভূমিতে পৌঁছার পর তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে যেতে হবে, তা অনেকে জানতেন না। যারা জেনেছেন, তারা ফ্লাইট বাতিল করেছেন বলেও জানিয়েছেন প্রবাসীদের অনেকে।
আকরাম হোসেন নামের এক প্রবাসী বলেন, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নামার পর বাসেই সাড়ে তিন ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়েছে। সঙ্গে অনেক বয়স্ক নারীরাও ছিলেন অস্বস্তিতে।
তিনি বলেন, যে হোটেলে উঠেছি, তারা ভাড়া-খাবার মূল্য খুব বেশি রাখছে। তাই স্টার প্যাসিফিক হোটেলের অবস্থান ছেড়ে অনুরাগে পাড়ি দেন তিনি। আর হোটেল ভাড়া বহন করতে হবে, তা জানা ছিল না।
হোটেলের সামনে ভীড় করা প্রবাসীদের স্বজনরা জানান, এখানে অনেকে বেড়াতে আসেননি। কারো মা মারা গেছেন। কেউ অসুস্থ বাবাকে দেখতে এসেছেন। কেউ পরিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেশে আসেন। কিন্তু করোনার নেগেটিভ সনদ থাকা স্বত্বেও এভাবে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে, তা তাদের অনেকে জানতেন না। এছাড়া হোটেলের মাত্রাতিরিক্তি খরচে দিকভ্রান্ত তাদের অনেকে।
ভাড়া বেশি রাখার কারণে অনেকে প্রাথমিকভাবে অবস্থান করা হোটেল ছেড়ে কম মূল্যের হোটেলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রবাসীদের কোয়ারেন্টিনের জন্য নগরের আটটি হোটেল নির্ধারণ করে রাখা হয়। এর মধ্যে অভিজাত হোটেল রোজভিউ, স্টার প্যাসিফিক ছাড়াও মধ্যম সারির হোটেল নুরজাহান গ্র্যান্ড, হলি গেইট, লা-রোজ, ব্রিটানিয়া, অনুরাগ ও হোটেল হলিসাইড নির্ধারণ করে রাখা হয়। এসব হোটেলের মধ্যে নুরজাহানে ভাড়া প্রতিরাতের ভাড়া খাবারসহ চার থেকে নয় হাজার টাকা। স্টার প্যাসিফিকে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। হলিগেইটে এক হাজার ৮০০ থেকে তিন হাজার, সাড়ে পাঁচ হাজার থেকে সাত হাজার, ব্রিটানিয়ায় এক হাজার ৬০০ থেকে তিন হাজার, অনুরাগে ৬০০ থেকে আড়াই হাজার, লা-রোজ সেন্টারে এক হাজার ৮০০ থেকে সাত হাজার এবং হলিসাইডে এক হাজার ২০ থেকে এক হাজার ৯৮০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজি এমদাদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, হোটেলের ভাড়া নির্ধারণ করা আছে। প্রবাসীদের কাছ থেকে কেউ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে পারবে না। তারপরও বিষয়টি তদারকিতে রেখেছি।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার(মিডিয়া) বিএম আশরাফ উল্লাহ তাহের বাংলানিউজকে বলেন, প্রবাসীরা যাতে হোটেলেই অবস্থান করেন, সে জন্য নির্ধারিত হোটেলগুলোর সামনে পুলিশী পাহারা রাখা হয়েছে। ৪ জানুয়ারি যুক্তরাজ্য থেকে আসা শিশুসহ ৪২ যাত্রীর মধ্যে ২৭ জন উঠেছেন হলিগেইটে, আট জন স্টার প্যাসিফিকে, অনুরাগে পাঁচ জন এবং হোটেল ব্রিটানিয়ায় অবস্থান করছেন দুই জন।
বাংলাদেশ সময়: ০৬১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২০
এনইউ/কেএআর