হবিগঞ্জ: একটি বাচ্চার জন্য কতইনা অপেক্ষা আর স্বপ্ন থাকে মানুষের। একটি সন্তান এসে তাদের পৃথিবী সুখের আলোয় ভরিয়ে দেবে।
শনিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। কিন্তু বাচ্চাটিকে টাকার বিনিময়ে বিক্রির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আবার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। তবে এখনও যোগাড় হয়নি নবজাতকের জন্য দুধ এবং তার অসুস্থ মায়ের শরীর জন্য রক্ত কেনার টাকা।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৬ দিন আগে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মন্দরী তেঘরিয়া গ্রামের রহিম উদ্দিনের স্ত্রী নিজের বাড়িতে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ হওয়ার পর শুক্রবার তাকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়েছিল।
হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসক জানান, মায়ের শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাই তার শরীরে পাঁচ ব্যাগ রক্ত প্রয়োজন। বাচ্চার জন্যও বাইরে থেকে দুধও কিনে আনতে হবে। তখনও টাকা ছিল নবজাতকের বাবা রহিম উদ্দিনের হাতে। এমন অবস্থায় তার চোখেমুখে অন্ধকার নেমে আসে।
এ দৃশ্য দেখছিলেন পাশের শয্যায় অসুস্থ বোনকে নিয়ে আসা হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নোয়াখাল গ্রামের নিঃসন্তান আসকর মিয়া। এমন অবস্থা দেখে তিনি বাচ্চার মায়ের চিকিৎসার জন্য অর্থ সহায়তা দেবেন বলে জানান এবং বিনিময়ে বাচ্চাটি তাকে দিয়ে দিতে বলেন।
পরে স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য আসহায় রহিম উদ্দিন মাত্র ছয় হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে আসকর মিয়ার হাতে তুলে দেন। কিন্তু কয়েক ঘণ্টাপরই হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ বিষয়টি জানতে পারে। এরপর আসকর মিয়াকে খবর দিয়ে এনে শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়। তবে এখনও বাচ্চাটির সন্তানের জন্য দুধ ও মায়ের শরীরে রক্ত দেয়ার টাকা যোগাড় হয়নি বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন রহিম উদ্দিন।
রহিম উদ্দিন বলেন, সন্তান জন্মের পর তার নাম রাখা হয়েছিল চাঁদনূর। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার মায়ের শরীরে পাঁচ ব্যাগ রক্ত প্রয়োজন। এক ব্যাগ রক্ত কিনে দেওয়া হয়েছে। আরেক ব্যাগ দান করেছেন অন্য একজন। এরপর আর দিতে পারি নাই টাকার অভাবে।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হক বাংলানিউজকে বলেন, দু’জনের সিদ্ধান্তেই শিশুটি হস্তান্তর হয়েছিল। তবে টাকা লেনদেনের বিষয়টি আমাদের জানা নেই এবং নবজাতকটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শিশুটির মায়ের রক্তের গ্রুপ ও পজিটিভ। রহিম উদ্দিন দম্পতির আরও দু’সন্তান রয়েছে।
রহিম উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে : ০১৭১৪-৪৫৬৮১২
বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২১
এসআইএস