রাজশাহী: ছিনতাইয়ের কোনো ঘটনা না ঘটলেও মামলা করেছিলেন নূরে হাবিব ডুজন (৩৮) নামে এক ব্যক্তি। এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, তার ছয় লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নূরে হাবিব রাজশাহী মহানগরীর ভদ্রা জামালপুর এলাকার অধিবাসী। তার বাবার নাম মৃত হাবিব উদ্দিন।
আরএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জানান, সোমবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে নূরে হাবিব মহানগরীর বোয়ালিয়া থানায় গিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে ছয় লাখ টাকা তুলে মোটরসাইকেলে করে যাওয়ার সময় তার টাকা ছিনতাই হয়েছে। বোয়ালিয়া থানা থেকে সামান্য দূরেই মোটরসাইকেলে আসা দুই যুবক তার টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে গেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। মামলার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। নূরে হাবিব মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, ঘটনার দিন তিনি প্রিমিয়ার ব্যাংকের রাজশাহী নগরীর আলুপট্টি শাখা থেকে টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে পুলিশ ব্যাংকটির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে নূরে হাবিবকে পায়নি। এমনকি ব্যাংক থেকে কোন টাকা তোলা হয়নি বলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানায়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, নূরে হাবিবের ব্যাংক হিসাবে আছে মাত্র ৮৩ টাকা। এতেই প্রমাণিত হয় যে নূরে হাবিবের অভিযোগ মিথ্যা।
এরপর নূরে হাবিবকে থানায় ডেকে দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে তিনি পুলিশের কাছে স্বীকার করেন যে ছিনতাইয়ের কোন ঘটনা ঘটেনি। তিনি লিখিতভাবে পুলিশকে জানান, তার বড় ভাই রওশন আলী আমেরিকা প্রবাসী। তার ডিপিএস থেকে তিনি ছয় লাখ টাকা তুলে খরচ করে ফেলেছেন। প্রিমিয়ার ব্যাংকের ঢাকার শ্যামলী শাখায় তার ডিপিএস ছিল। তিনি ডিপিএস থেকে বিভিন্ন সময় টাকা তোলার কারণে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ছয় লাখ টাকা কেটে নিয়েছে। নূরে হাবিব তার ভাইয়ের টাকা তাকে না জানিয়ে খরচ করে দেওয়ার কারণেই তিনি এই ছিনতাই নাটক সাজান।
আরএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আরও জানান, আদালতে মিথ্যা এই মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত ও হয়রানি করায় বাদীর বিরুদ্ধেই পেনাল কোড-১৮২ ধারায় প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলেও উল্লেখ করেন আরএমপির এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২১
এসএস/এমআরএ