ঢাকা: বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরত আসা কর্মীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে সরকার। দেশব্যাপী বিদেশফেরত কর্মীদের তালিকা তৈরি করা হবে।
‘প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান সৃজনে সহায়ক প্রকল্প’ চলতি সময় থেকে ২০২৫ সালের নভেম্বর মেয়াদে ৪৩০ কোটি ৫২ লাখ টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ৪২৫ কোটি টাকা ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের উপ-সহকারী পরিচালক মো. নবীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় বিদেশফেরত কর্মীরা যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেজন্য প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পটি প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। বিদেশফেরত কর্মীদের একটা সঠিক ডাটাবেজও তৈরি করবে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড সূত্র জানায়, প্রকল্পের মাধ্যমে বিদেশ থেকে ফেরত আসা কর্মীদের তালিকা তৈরি করা হবে। বাছাই করা কর্মীদের ওরিয়েন্টেশান ও কাউন্সেলিং করে এককালীন ক্যাশ ইনসেনটিভ দেওয়া হবে। যেন বিদেশফেরত শ্রমিকেরা নিজেদের যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে উপযুক্ত চাকরি অথবা ব্যবসায় সম্পৃক্ত হতে পারেন। তাদের আর্থিক ও অন্যান্য সহযোগিতা দেওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং ঋণ সহায়তা পেতে সহযোগিতা করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোভিড-১৯ এর কারণে বিদেশফেরত কর্মীদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে দুই লাখ কর্মীর ওরিয়েনটেশন ও কাউন্সেলিং করাসহ তথ্য সমৃদ্ধ ডাটাবেজ তৈরি করা হবে। বিদেশফেরত দক্ষ ২৩ হাজার ৫০০ কর্মী বাছাই, তালিকা তৈরি এবং স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে সনদের ব্যবস্থা করা হবে। প্রকল্পের আওতায় সার্ভিস ম্যাপ তৈরি করে প্রবাসী কর্মীদের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। বোর্ডের কল্যাণে (বিদেশ ফেরত কর্মী) সাধারণ মানুষকে অবহিতকরণে জেলা উপজেলা ইউনিয়ন পর্যায়ে সভা সেমিনার, কর্মশালার আয়োজনসহ ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে।
প্রকল্পটি ৮টি বিভাগের ৩০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে। বিশ্বের ১৭৮টির অধিক দেশে বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ কর্মী বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছেন। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বিদেশে কর্মরত কর্মীরা দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। কোভিড-১৯ এর কারণে বিদেশে কাজ হারিয়ে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৫ লাখ কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। ফেরত আসা এসব কর্মীরা দেশে আসার পর অধিকাংশই কর্মহীন অবস্থায় রয়েছেন। তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং ভবিষ্যত নিয়ে দিশেহারা। আর্থিকসহ সমাজে তারা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এসব ফেরত আসা কর্মীদের সমাজে পুনর্বাসনে সহায়তা করার লক্ষ্যেই প্রকল্পটি নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২১
এমআইএস/এইচএডি/