বগুড়া: বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম (৪৮) হত্যা মামলার ঘটনায় জড়িত ৫ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত পাঁচজন হলেন-উপজেলার হলদিবাড়ী আটাপাড়া গ্রামের মৃত মান্নান মণ্ডলের ছেলে ওমর ফারুক (৩৫), ইটালী মধ্যপাড়া গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে ফারুক আহম্মেদ (৩০), আব্দুর রাজ্জাক (৫৮), জিয়াউর রহমান জিয়া (৪০) ও তার স্ত্রী মোছা. শাপলা খাতুন (৩৫)।
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে বগুড়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আশরাফ ভূঞা।
এ হত্যাকাণ্ডের পরদিন ৬ জানুয়ারি ফরিদুলের স্ত্রী ইসমত আরা অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে শেরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
গ্রেফতার ওমর ফারুক ভিকটিম ফরিদুলের সৎ শ্যালক, ফারুক আহম্মেদ ভিকটিমের আপন ভাতিজা, জিয়াউর রহমান জিয়া ও শাপলা খাতুন ভিকটিমের আপন ছোট ভাইয়ের বউ এবং আব্দুর রাজ্জাক ভিকটিমের চাচা।
পুলিশ জানান, মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) সকালে মানিকগঞ্জ জেলা থেকে ওমর ফারুককে গ্রেফতার করা হয়। ওমর ফারুক নিজেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে নাটক সাজিয়ে ছিলেন। এতে পুলিশের সন্দেহ হয়, পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী অন্য চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের ৭ দিনের মাথায় মামলার রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হলো। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ এবং টাকা-পয়সা লেনদেনের দেনা-পাওনাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত করেছেন আসামিরা।
চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় নিজ বাড়ির সামনে নৃশংসভাবে খুন হন ফরিদুল। তার মায়ের জমি-জমা নিয়ে ফরিদুলের অন্যান্য ভাইদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল। ফরিদুল কৌশলে তার মায়ের এবং বোনদেরও কাছ থেকে বসতবাড়ির এবং ছোনকা বাজারের পাশে মূল্যবান জায়গা রেজিস্ট্রি করে নেন। ফলে ভাইদের সঙ্গে তার চরম শত্রুতা শুরু হয়।
অন্যদিকে ফরিদুল তার সৎ শ্যালক ওমর ফারুকের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকার জমি কট (বন্ধক) নিয়েছিল। এ টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে তার সঙ্গে শত্রুতা শুরু হয়। ফলে ভিকটিমের ভাই এবং সৎ শ্যালক মিলে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। গত ঈদুল আযহার পর ফরিদুল তার একমাত্র ছেলে ইয়ানুর রহমান শাওনকে (১০) পড়াশনার জন্য ঢাকার সাভানে তার মেয়ের বাড়িতে রাখেন। তিনি স্ত্রীসহ নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। তার স্ত্রী গত ২৮ ডিসেম্বর তার ননদকে ডাক্তার দেখানোর জন্য ঢাকায় যান এবং মেয়ের বাড়িতে উঠেন। বাড়িতে কেউ না থাকার সুবাদে গ্রেফতারকৃতরা এ সময়টি বেছে নেন।
পুলিশ সুপার বলেন, বুধবার দুইজন আসামিকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে পাঠানো হবে। আর অন্য তিনজনকে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করে সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে পাঠানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২১
এএটি