মাগুরা: মাগুরার শালিখা উপজেলার আড়পাড়া এলাকার বর জুয়েল মুন্সী (২৫) মোটরসাইকেলে করে বিয়ে করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন। বরযাত্রী থেকে শুরু করে নতুন বউ আনা সব কাজ করেছেন মোটরসাইকেলে।
জুয়েল আড়পাড়া এলাকার মহর আলী মুন্সীর ছেলে। তিনি সোমবার (১৮ জানুয়ারি) মাগুরা সদরের ইছাখাদা এলাকার আক্কাস মোল্যার মেয়ে লিমাকে বিয়ে করেন।
বর জুয়েল বাংলানিউজকে জানান, ছোট বেলা থেকে তিনি মোটরসাইকেল চালানোর ভক্ত। এলাকায় তিনি জুয়েল বাইকার নামে পরিচিত। পড়ালেখা বলতে কলেজের গণ্ডি পার হয়ে তিনি মালয়েশিয়া চলে যান। ৬ বছর থেকে দেশে ফিরে আসেন। এখন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। মোটরসাইকেল চালানো আর নতুন মডেলের বাইক পরিবর্তন করাই জুয়েলের শখ। জুয়েলের মাথায় আসে তিনি বিয়ে করবেন মোটরসাইকেলে চড়ে। যে কথা সেই কাজ। বিয়ের আগে ৩ লাখ টাকা মূল্যের নতুন মডেলের একটি মোটরসাইকেল কেনেন। হবু বধূ লিমার সঙ্গে তার ৭ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে পারিবারিকভাবে বিয়ের দিন-তারিখ নির্ধারিত হয়। সোমবার বিকেলে ২৭টি মোটরসাইকেলে করে বরযাত্রী, বন্ধু, আত্মীয় স্বজন নিয়ে মাগুরার ইছাখাদা কনের বাড়িতে যান। বিয়ের সব কাজ শেষ করে নতুন বউ নিয়ে তিনি মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে নিজের বাড়ি নিয়ে আসেন।
অভিনব এই বিয়েতে এলাকায় সাড়া পড়ে। রাস্তার দু’পাশে লোকজন ভিড় করেন বর-কনেকে এক নজর দেখতে। মাগুরা বাইকার নামে ফেসবুক গ্রুপে ছবি ও ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেখানে গ্রুপের সসদস্যরা এই দম্পতিকে শুভ কামনা জানান।
বর জুয়েল মুন্সী বাংলানিউজকে বলেন, এটা আমার দীর্ঘ দিনের শখ। দু’পক্ষের মুরব্বিরা এভাবে বিয়ে করতে কেউ রাজি হচ্ছিলেন না। এনিয়ে অনেক ঝামেলা হচ্ছিল। কয়েকবার বিয়ের দিনও পাল্টানো হয়েছে। অবশেষে বাইকে বিয়ে করতে পেরে আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
জুয়েল মুন্সীর বন্ধু ইমরান হোসেন, মানিক মাহামুদ ও বিএম জিসান বাংলানিউজকে জানান, মোটরসাইকেল প্রেমিক বন্ধু জুয়েল তার ইচ্ছে আর স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে পারায় আমরাও আনন্দিত। সামনের দিনগুলো নবদম্পতির ভালো কাটুক সেই কামনা ও দোয়া।
জুয়েলের বাবা মহর আলী মুন্সী বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সমাজে মোটরসাইকেলে বিয়ে করার রেওয়াজ নেই। বিষয়টি অনেকেই অন্যভাবে নিচ্ছেন। তারপরও ছেলে নাছোড়। তার শখ পূরণ করতেই এমন আয়োজন।
শালিখা সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আমজাদ আলী মোল্যা বাংলানিউজকে বলেন, আমার ইউনিয়নের আড়পাড়া এলাকায় জুয়েল নামে এক যুবক মোটরসাইকেলে বিয়ের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। বিষয়টি এলাকায় সাড়া ফেলেছে।
শালিকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরীকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, মোটরসাইকেলে বিয়ের বিষয়টি শুনেছি। তবে বিয়ের মতো বিষয়ে বরযাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়ে মোটরসাইকেল ব্যবহারে যুবকদের নিরুৎসাহিত করছি।
বাংলাদেশ সময়: ০৬২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২১
এসআরএস