ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সেতু আছে, নেই সংযোগ রাস্তা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২১
সেতু আছে, নেই সংযোগ রাস্তা!

মানিকগঞ্জ: সেতু থাকলেও নেই সংযোগ রাস্তা। সেতুর দুই পাশের মাটি ভরাট না থাকায় কোনো কাজেই আসছে না আর এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে দৌলতপুর উপজেলার চকমিরপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর বিষ্ণুপুর  গ্রামের হাজারো মানুষ।

জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে গত ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে উপজেলার চকমিরপুর ইউনিয়নের খালেক মাস্টারের বাড়ির কাছে ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৩ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতু নির্মাণের পর থেকে আজ অবধি সেতুর গোড়ায় মাটি না থাকায় অকেজো হয়ে পড়ে আছে অথচ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পূর্ণাঙ্গ কাজ না করেই প্রকল্পের অর্থ তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চকমিরপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর বিষ্ণুপুর খালেক মাস্টারের বাড়ির কাছে ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৩ টাকা ব্যয়ে খালের ওপর নির্মিত হয় সেতু আর এখন তা মানুষের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেহেতু সেতু ব্যবহার করতে পারছে না গ্রামবাসী সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলাকেই দায়ী করছেন তারা। গত কয়েক বছরেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুর সংযোগ রাস্তার মাটি ভরাটের কাজ রহস্যজনক কারণে শেষ না করায় সেতুর আশেপাশে জমে থাকছে পানি আর এ পানি জমাট বেধে থাকায় স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা ভিজে যাচ্ছে তারা। বন্যার সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো নাজুক হয়ে যায়, সেতু থাকতেও নৌকা কিংবা ভিজে পার হতে হয় হাজারো গ্রামবাসীকে। জনস্বার্থে সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়কের মাটির কাজ জরুরি ভিত্তিতে ভরাটের দাবি জানান গ্রামবাসী।
রামচন্দ্রপুর এলাকার আবুল হাসেম নামে এক বৃদ্ধ বাংলানিউজকে বলেন, গত ৩-৪ বছর আগে সেতু করে চলে গেছে ঠিকাদার তারপর থেকে আমরা একদিনের জন্যও এই সেতু দিয়ে পার হতে পারিনি। স্থানীয় চেয়রাম্যান মেম্বার নেতাদের একাধিকবার বলেছি কিন্তু কোনো কাজ হয়ি। এখন আশা ছেড়ে দিয়েছি কারণ আমরা-তো অবহেলিত আমাদের কেনো তারা সুযোগ সুবিধা করে দিবে, ভোটের সময় এলে নেতারা আসে আর ভোট চলে গেলে তাদের চরণ ধুলি পাওয়াটা অবিশ্বাস্য হয় দাঁড়ায়।  

নবিরণ বিবি নামে এক নারী বলেন, বয়স হয়েছে এখনো খালের পানিতে নেমে পার হয়ে যেতে হয় দৌলতপুর বাজারে। সেতু কইরে দিছে কিন্তু সেতুতে ওঠার কোনো ব্যবস্থা করে দেয়নি তারা (ঠিকাদার)। ছোট ছোট নাতি-নাতনি নিয়ে ভিজে স্কুলে যাই, ভয় করে কখন আবার ওরা (নাতি-নাতনি) পানিতে পড়ে যায়, কারণ ওরা এখনো সাঁতার শেখনি এখনো আমরা চাই অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুর গোড়ায় মাটি দিয়ে যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দিক।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সেতু যখন নির্মাণ হয় ওই সময় আমি এ উপজেলায় কর্মরত ছিলাম না, তাই বিস্তারিত বলতে পারবো না। তবে নতুন বরাদ্দ এলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুর দুই পাশে মাটি দিয়ে ভরাট করা হবে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সেতু আছে কিন্তু সংযোগের জন্য মাটি নেই এ বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। যত দ্রুত সম্ভব আমি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে দিয়ে এ সমস্যার সমাধান করবো।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।